জৈব রসায়ন

এইচএসসি রসায়ন ২য় পত্রের ২য় অধ্যায় সমন্বিত জৈব রসায়ন নোট ২০২৫ PDF Download

Advertisements

এইচএসসি রসায়ন ২য় পত্রের ২য় অধ্যায় জৈব রসায়নের নোটটি এমন ভাবে সাজানো হয়েছে যার মাধ্যমে তুমি বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় , মেডিকেল কলেজ পরিক্ষা ও ইন্জিনিয়ারিং পরিক্ষার প্রস্তুতি নিতে পারবে । এই লেকচারে অন্তর্ভুক্ত আছে জৈব রসায়ন: জৈব রসায়নের সুচনা, সমাণুতা, অ্যালকেন, অ্যালকিন, অ্যালকাইন , প্রাণশক্তি মতবাদ, সমগোত্রীয় শ্ৰেণী, জৈব বিক্রিয়াসমূহ, বন্ধন বিভাজন, টলুইন, ফেনল । তাই আর দেরি না করে আমাদের জৈব রসায়নের লেকচার শীটটি পড়ে ফেলুন ।।

জৈব রসায়ন নোট pdf

জৈব যৌগ

জৈব যৌগ বলতে হাইড্রোজেন ও কার্বন দ্বারা গঠিত হাইড্রোকার্বন এবং হাইড্রোকার্বন থেকে উদ্ভূত যৌগসমূহকে বোঝায়। এ সব জৈব যৌগে কার্বনের সাথে প্রধানত হাইড্রোজেন, অক্সিজেন, নাইট্রোজেন, সালফার, ফসফরাস, হ্যালোজেন প্রভৃতি মৌল যুক্ত । থাকে। যেমন, মিথেন (CH4), মিথাইর ক্লোরাইড (CH3CI), মিথাইল অ্যালকোহল (CH3OH), অ্যাসিটিক এসিড (CH3COOH) প্রভৃতি প্রত্যেকটি হল জৈব যৌগ।

জৈব রসায়নের প্রাণশক্তি মতবাদ

বিজ্ঞানী বার্জেলিয়াসের মতে-জৈব যৌগসমূহ কেবলমাত্র এক রহস্যজনক শক্তি ‘প্রাণশক্তি’ এর প্রভাবে প্রস্তুত হয়ে থাকে। তার মতে জীবনী শক্তি ছাড়া এ যৌগসমূহ পরীক্ষাগারে প্রস্তুত করা অসম্ভব করা অসম্ভব ।

1808 সালে বিজ্ঞানী বার্জেলিয়াস উদ্ভিদ ও প্রাণী থেকে প্রাপ্ত যৌগসমূহকে জৈব যৌগ এবং খনিজ পদার্থ হতে প্রাপ্ত যৌগসমূহকে অজৈব যৌগ নামকরণ করেন।

Advertisements

সর্বোচ্চ বা কার্যকরী অধিক্রমণের শর্ত: পারমাণবিক অরবিটাল থেকে সর্বোচ্চ বা কার্যকরী অধিক্রমণের মাধ্যমে আণবিক অরবিটাল গঠনের জন্য কিছু শর্ত পালন করতে হয়। যথা –

  • (ক) সংযোগকারী অরবিটালকে অবশ্যই অর্ধপূর্ণ হতে হবে।
  • (খ) সংযোগকারী অরবিটালদ্বয়ের শক্তি অনুরূপ হতে পারে ।
  • (গ) বন্ধনী অরবিটালকে আণবিক অক্ষ বরাবর একই প্রতিসমতা বিশিষ্ট হতে হবে।
  • (ঘ) বন্ধনী অরবিটালকে ইলেকট্রনদ্বয়কে অবশ্যই বিপরীত ঘূর্ণনধর্মী হতে হবে।

সমগোত্রীয় শ্ৰেণী

একই প্রকার মৌল সমন্বয়ে গঠিত সমধর্মী জৈব যৌগসমূহকে এদের আণবিক ভরের ক্রমবর্ধমান সংখ্যা মানে অর্থাৎ অণুস্থিত কার্বন পরমাণুর বৃদ্ধিক্রমে সারিবদ্ধ করে এবং প্রত্যেক পাশাপশি দুটি যৌগের মধ্যে মিথিলিন (CH2—) মূলকে পার্থক্য বজায় রেখে যে যৌগ শ্রেণী পাওয়া যায়, তাকে সমগোত্রীয় শ্রেণী বা হোমোলগাস্ সিরিজ বলে।

একই সমগোত্রীয় শ্রেণীর প্রত্যেক সদস্য যৌগকে এক একটি সমগোত্রক বা হোমোলগ বলে ।

একই সমগোত্রীয় শ্রেণীর ক্ষেত্রে পাশাপাশি দুইটি সমগোত্রক এর মধ্যে মিথিলিন মূলকের (-CH2-) পার্থক্য থাকে।

  • অ্যালকেনের সংকেতঃCnH2n+2
  • অ্যালকিনের সংকেতঃCnH2n

জৈব বিক্রিয়া: সমন্বিত জৈব রসায়ন

যে বিক্রিয়া জৈব অনুর কোন কার্বন-পরমাণুর সঙ্গে অপর কোন কার্বন-পরমাণুর বা অন্য পরমাণুর মধ্যবর্তী সমযোজী বন্ধন ভেঙে নতুনভাবে সমযোজী বন্ধন সৃষ্টির মাধ্যমে বিক্রিয়া-অবস্থার উপযোগী স্থায়ী অণু সৃষ্টি হয় তাকে জৈব বিক্রিয়া বলে । জৈব বিক্রিয়া জৈব যৌগের অণুস্থিত ‘কার্যকরী মূলক’ দ্বারা প্রধানত নিয়ন্ত্রিত হয়। জৈব অণুস্থিত বিভিন্ন কার্যকরী মূলকের সংঘর্ষের ফলে বিক্রিয়া ঘটে ।

আরো পড়ুন :

জৈব বিক্রিয়াসমূহ সম্পর্কিত তথ্যাবলী

কৌশলগত দিক, বিক্রিয়ার ধারা ও উৎপন্ন বস্তুর প্রকৃতির উপর ভিত্তি করে জৈব রসায়নের বিক্রিয়াকে চার শ্রেণীতে ভাগ করা হয়। যথাঃ

  • প্রতিস্থাপন বিক্রিয়া: যে বিক্রিয়ায় কোন জৈব যৌগ হতে এক বা একাধিক পরমাণু বা মূলক প্রতিস্থাপিত হয়ে সে স্থানে অধিকতর সক্রিয় কোন পরমাণু বা মূলক স্থাপিত হয় তাকে প্রতিস্থাপন বিক্রিয়া বলে ।
  • যুত বা সংযোজন বিক্রিয়া: যে বিক্রিয়ায় দুটি পদার্থের সরাসরি বা প্রত্যক্ষ সংযোগে একটি নতুন যৌগ গঠিত হয় তাকে যুত বিক্রিয়া বলে। এটি ” বন্ধনযুক্ত যৌগের বৈশিষ্ট্যমূলক বিক্রিয়া।
  • অপসারণ বিক্রিয়া: যে বিক্রিয়ায় কোন যৌগের অণুস্থ পাশাপাশি দুটি বা চারটি পরমাণু বা মূলক অপসারিত হয়ে অসম্পৃক্ততার সৃষ্টি হয় তাকে অপসারণ বিক্রিয়া বলে।
  • সমাণুকরণ বিক্রিয়া: যে বিক্রিয়ায় কোন যৌগের অণুস্থ পরমাণুগলো বা মূলকগুলো পুনর্বিন্যস্ত হয়ে একই আণবিক সংকেতবিশিষ্ট নতুন যৌগ তথা মূল যৌগের সমাণু উৎপন্ন করে তাকে পুনর্বিন্যাস বা সমানুকরণ বিক্রিয়া বলে ।

বন্ধন বিভাজন

বন্ধন বিভাজন দুই প্রকার। যথা:

  • সুষম বিভাজন: বন্ধন ভাঙ্গার সময় যদি বন্ধনযুক্ত উভয় পরমাণু এক জোড়া e হতে একটি একটি করে সমানভাবে ভাগ করে নেয় তাকে বন্ধনের সুষম বিভাজন বলে।
  • বিষম বিভাজন: বন্ধন ভাঙ্গনের সময় যদি শেয়ারকৃত উভয় e” বন্ধন যুক্ত একটি পরমাণুর সঙ্গে চলে আসে এবং অপর পরমাণু শেয়ারকৃত ইলেকট্রনের কোন অংশ না পায় তবে তাকে বন্ধনের বিষম বিভাজন বলে ।

গুরুত্বপূর্ণ তথ্য: জৈব রসায়ন

  • ‘মারকনিকভের নিয়ম’ রুশ বিজ্ঞানী মারকনিকভ 1870 খ্রিস্টাব্দে প্রদান করেন ।
  • পলিথিন নমনীয় কিন্তু দৃঢ় প্রকৃতির কঠিন প্লাস্টিক পদার্থ হওয়ায় এসিড, ক্ষার এবং বিভিন্ন দ্রবাক দ্বারা তা আক্রান্ত হয় না।
  • সক্রিয় হাইড্রোজেন বিশিষ্ট যেমন অ্যালকোহল, কার্বক্সিলিক এসিড ইত্যাদি বিকারকের সঙ্গে অ্যাসিটিলিনের যুত-বিক্রিয়ায় ভিনাইল যৌগ গঠন করার প্রক্রিয়াকে ভাইনাইলেশন (vinylation) বলে।
  • অ্যালকিনের প্রথম তিনটি সদস্য (C2-C4) সাধারণ অবস্থায় গ্যাসীয়। পরবর্তী (C5-C15) তরল এবং পরবর্তী সদস্যগুলো কঠিন ।
  • আণবিক ভর বৃদ্ধির সঙ্গে অ্যালকিন সদস্যের গলনাঙ্ক ও স্ফুটনাঙ্ক বৃদ্ধি পায় ।
  • অ্যালকিনকে অ্যালকা-ডাই-ইন বা ডাই-অ্যালকিন বলে ।
  • ইথিলিন বায়ু অপেক্ষা সামান্য হালকা ।
  • বর্তমানে ইথারের পরিবর্তে ইথিলিন চেতনানাশক রূপে প্রচুর ব্যবহৃত হয়।
  • লৌহ সিলিন্ডারে উচ্চ চাপে অ্যাসিটিলিনকে অ্যাসিটোনে দ্রবীভূত করে স্থানান্তরিত করা হয় ।
  • তরল অ্যাসিটিলিন বিস্ফোরন ঘটায়।
  • SiO2-কে কাইসেল গুড় বলা হয়।
  • অ্যাসিটিলিন টেট্রাক্লোরাইড বাজারে ওয়েস্ট্রন নামে পরিচিত।
  • অক্সি অ্যাসিটিলিন শিখার তাপমাত্রা 3500°C
  • কপার-অ্যাসিটিলাইড এর বর্ণ লাল ।
  • সিলভার-অ্যাসিটিলাইডের বর্ণ সাদা।
  • কৃত্রিম উপায়ে কাঁচা ফল পাকাতে ইথিলিন ব্যবহৃত হয় ।
  • ইথিলিনে sp2 সংকরণ বিদ্যমান।
  • অক্সি ইথিলিন শিখা প্রস্তুতিতে ইথিলিনের ব্যবহার আছে।
  • অ্যাসিটিলিনে sp সংকরন বিদ্যমান।
  • অ্যাসিটিলিন একটি অম্লধর্মী যৌগ।
  • অ্যাসিটিলিনকে ডাই- অ্যালকাইনও বলা হয় ।
  • অ্যাসিটিলিন বায়ু অপেক্ষা সামান্য হালকা

টলুইন

ভৌত ধর্মাবলী

  • টলুইন একটি বর্ণহীন তরল পদার্থ।
  • এর গলনাংক ও স্ফুটনাংক যথাক্রমে 98°C এবং 110°C
  • টলুইন পানি অপেক্ষা হালকা (আপেক্ষিক গুরুত্ব 0.866)
  • এটি পানিতে অদ্রবণীয় কিন্তু অ্যালকোহল, ইথারে দ্রবণীয়
  • এটি একটি উত্তম দ্রাবক ।

জৈব রাসায়নিক ধর্মাবলী:

  • টলুইনের অণুটি একটি ফিনাইল মূলক বা অ্যারোমেটিক নিউক্লিয়াস ও একটি মিথাইল মূলক বা পার্শ্বশিকল দ্বারা গঠিত ফলে অ্যারোমেটিক ও অ্যালিফেটিক উভয় প্রকার ধর্ম টলুইনে আছে।
  • টলুইন বৈশিষ্ট্যপূর্ণ প্রতিস্থাপন বিক্রিয়া যেমন- নাইট্রেশন, সালফোনেশন, ফ্রিডেল ক্র্যাফটস বিক্রিয়া ও হ্যালোজেনেশন বিক্রিয়া প্রদর্শন করে ।

ফেনল

  • ফেনল বর্ণহীন কেলাসাকার কঠিন পদার্থ ।
  • ফেনলের গলনাংক 41°C এবং টলুইনের গলনাংক -95°C.
  • পানিতে দ্রবীভূত অবস্থায় ফেনল সামান্য পরিমাণে বিয়োজিত হয়ে H’আয়ন দেয়, ফলে ফেনল অম্লধর্মী হয়।
  • কিউমিন ফেনল পদ্ধতিতে 90% ব্যবহৃত ফেনলের শিল্পোৎপাদন করা হয়।
  • টলুইন থেকে উদ্ভুত ফেনলসমূহকে ক্রিসল বলা হয় ।
  • নাইলন প্রস্তুতিতে যে সাইক্লোহেক্সানল ব্যবহৃত হয়, তা উৎপাদনে ফেনল ব্যবহৃত হয়।
  • স্যালল ‘Sun screening agent’ রূপে ব্যবহৃত হয়।
  • ফেনলগুলো মৃদু অম্লধর্মী কিন্তু অ্যারোমেটিক অ্যালকোহলগুলি অ্যালিফেটিক অ্যালকোহল গুলোর মত নিরপেক্ষ।
  • ফেনল নীল লিটমাসকে লাল করে।
  • পোড়া ক্ষতের জ্বালা ও পচন নিবারণে বার্নল মলম নামে পিকরিক এসিড ব্যবহৃত হয়।
  • মানুষ ও ষাঁড়ের প্রস্রাবে সামান্য ফেনল থাকে ।
  • সদ্য প্রস্তুত ফেনল বর্ণহীন কেলাসাকার পদার্থ। বায়ুর সংস্পর্শে ফেনল ধীরে ধীরে বেগুনি বর্ণ ধারন করে। ফেনল কার্বনিক এসিড অপেক্ষা দূর্বল।
  • ধাতব Na-এর সহিত ফেনল বিক্রিয়া করে না ।
  • বিস্ফোরক তৈরীতে পিকরিক এসিড ব্যবহৃত হয়পিকরিক এসিড ফেনল অপেক্ষা 12 গুন বেশি অম্লীয়।

এইচএসসি রসায়ন ২য় পত্রের ২য় অধ্যায় সমন্বিত জৈব রসায়নের লেকচার শীটটি ডাউনলোড করুন :

Facebook
X
LinkedIn
Telegram
Print

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Stay Connected

Subscribe our Newsletter

Scroll to Top