Advertisements
এইচএসসি রসায়ন ২য় পত্রের ৪র্থ অধ্যায় তড়িৎ রসায়নের নোটটি এমন ভাবে সাজানো হয়েছে যার মাধ্যমে তুমি বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় , মেডিকেল কলেজ পরিক্ষা ও ইন্জিনিয়ারিং পরিক্ষার প্রস্তুতি নিতে পারবে । এই লেকচারে অন্তর্ভুক্ত আছে তড়িৎ রসায়ন: তড়িৎ বিশ্লেষণ ও ফ্যারাডের সূত্র, পারমাণবিক শোষণ বর্ণালি বিশ্লেষণ, লেড স্টোরেজ ব্যাটারি, লিথিয়াম আয়ন ব্যাটারি, ফুয়েল সেল, তড়িৎ রাসায়নিক কোষ, তড়িৎ বিশ্লেষ্যের পরিবাহিতা MCQ ও সৃজনশীল প্রশ্নোত্তর pdf । তাই আর দেরি না করে আমাদের তড়িৎ রসায়নের লেকচার শীটটি পড়ে ফেলুন ।।
তড়িৎ রসায়ন
তড়িৎ-বিশ্লেষণের সার সংক্ষেপ
- ঋণাত্মক ক্যাথোডে বিজারণ ঘটে এবং এর মাধ্যমে ব্যাটারি থেকে ইলেকট্রন কোষে প্রবেশ করে।
- ধনাত্মক অ্যানোডে জারণ ঘটে এবং এর মাধ্যমে ইলেকট্রন কোষ ত্যাগ করে ।
- ক্যাথোডে ক্যাটায়ন যতটি ইলেট্রন গ্রহণ করে অ্যানোডে অ্যানায়ন ঠিক ততটি ইলেকট্রন ত্যাগ করে।
- যে সকল পদার্থের মধ্য দিয়ে বিদ্যুৎ চলাচল করতে পারে, তারা তড়িৎ পরিবাহী। যেমন- লোহা, তামা, পারদ, রূপা, সোনা ইত্যাদি সকল ধাতু এবং গলিত লবণ বা এসিড, ক্ষার ও লবণের দ্রবণ।
- যে সকল পদার্থের মধ্য দিয়ে বিদ্যুৎ চলাচল করতে পারে না, তারা তড়িৎ অপরিবাহী। যেমন- কাচ, কাঠ, রাবার, চিনি, গন্ধক, পেট্রল, তারপিন তেল ইত্যাদি।
- সকল আয়নিক যৌগ এবং কিছু পোলার সমযোজী যৌগ গলিত অবস্থায় ও দ্রবণে তড়িৎ বিশ্লেষ্য হয়। যেমন-সোডিয়াম ক্লোরাইড দ্রবণ ।
- তাপমাত্রা বৃদ্ধির ফলে ধাতব পরিবাহীর বৈদ্যুতিক পরিবাহিতা হ্রাস পায়, কিন্তু তড়িৎ বিশ্লেষ্যের ক্ষেত্রে তা বৃদ্ধি পায়।
- বিগলিত বা দ্রবীভূত অবস্থায় তড়িৎ বিশ্লেষ্যের মধ্য দিয়ে বিদ্যুৎ পরিবহনের সময় সেই যৌগের বিয়োজন বা রাসায়নিক পরিবর্তনকে তড়িৎ বিশ্লেষণ বলা হয় ।
- যে পাত্রে তড়িৎ বিশ্লেষণ চালানো হয়, তাকে তড়িৎ বিশ্লেষ্য কোষ বলা হয় ।
- তড়িৎ বিশ্লেষণকালে ক্যাথোডে বিজারণ এবং অ্যানোডে জারণ প্রক্রিয়া সংঘটিত হয় ।
- বিশুদ্ধ পানি বিদ্যুৎ কুপরিবাহী।
- তড়িৎ বিশ্লেষণের মাধ্যমে একটি ধাতুর তৈরি জিনিসপত্রের উপর অন্য একটি ধাতুর প্রলেপ সৃষ্টি করাকে ইলেক্ট্রোপ্লেটিং (Electroplating) বলা হয় ।
- তড়িৎ রসায়নের শ্রেণীতে একাধিক ক্যাটায়নের মধ্যে যে ক্যাটায়নটি সবচেয়ে নিচে অবস্থিত, তার বিজারণ সবার আগে ঘটে ।
- মোল প্রতি 96500 কুলম্ব অনুপাত (C mol-1) ফ্যারাডে ধ্রুবক নামে পরিচিত।
তড়িৎ রসায়নের ক্ষেত্রে ফ্যারাডের সূত্র
ফ্যারাডের সূত্র: 1933 খ্রিস্টাব্দে ফ্যারাডে দুটি সূত্র প্রণয়ন করেন । যথা:
- প্রথম সূত্রঃ দ্রবণে বা গলিত অবস্থায় কোন তড়িৎ বিশ্লেষ্য পদার্থের মধ্য দিয়ে তড়িৎ প্রবাহিত করলে বিয়োজনের পরিমাণ তথা ইলেকট্রোডে দ্রবীভূত বা জমাকৃত পদার্থের ভর, প্রবাহিত বিদ্যুৎ আধান বা বিদ্যুৎ শক্তির পরিমাণ এর সমানুপাতিক ।
- দ্বিতীয় সূত্র: যদি বিভিন্ন তড়িৎ বিশ্লেষ্য পদার্থের দ্রবণের মধ্যে একই সময়ের জন্য একই পরিমাণ তড়িৎ প্রবাহ তথা একই পরিমাণ বিদ্যুৎ চার্জ প্রবাহিত করা হয় তবে ইলেকট্রোডসমূহের দ্রবীভূত বা সঞ্চিত পদার্থের পরিমাণ পদার্থসমূহের তড়িৎ রাসায়নিক তুল্যাংকের সমানুপাতিক ।
আরো পড়ুন :
ফ্যারাডের সূত্রের প্রযোজ্যতা
- ফ্যারাডের সূত্র দ্রবণ ও গলিত ইলেকট্রোলাইট উভয়ক্ষেত্রেই সমানভাবে প্রযোজ্য।
- ফ্যারাডের সূত্রের উপর তাপমাত্রা, চাপ, দ্রাবক ও দ্রবণের ঘনমাত্রার উপর তেমন কোন প্রভাব নেই ।
ফ্যারাডের সূত্রের সীমাবদ্ধতা
- এ সূত্র ইলেকট্রনীয় পরিবাহীর ক্ষেত্রে প্রয়োগ করা যায় না।
- যে সমস্ত তড়িৎ বিশ্লেষণে 100% তড়িৎ ইলেকট্রোলাইটিক পদ্ধতিতে পরিবাহীতে হয়, এ সূত্র শুধু সেক্ষেত্রে প্রযোজ্য।
- একাধিক বিক্রিয়া সংঘটিত হলে গণনায় ত্রুটি দেখা যায়।
ফ্যারাডের সূত্রের প্রয়োগ
- এ সূত্রের সাহায্যে ইলেকট্রনের চার্জ গণনা করা যায় ।
- কি পরিমাণ তড়িৎ প্রবাহিত করলে কতটুকু বস্তু অ্যানোড বা ক্যাথোডের বিক্রিয়ায় অংশগ্রহণ করবে তা ২য় সূত্রের সাহায্যে জানা যায় ।
- তড়িৎ দক্ষতা: কোন তড়িৎ বিশ্লেষণ প্রক্রিয়ায় ক্যাথোডে যে পরিমাণ মৌল জমা হয় এবং ফ্যারাডের সূত্রানুসারে যে পরিমাণ মৌল জমা হওয়ার কথা, এ দুয়ের অনুপাতকে তড়িৎ দক্ষতা বলে। যেমন: নিকেল দ্রবণের ক্ষেত্রে তড়িৎ দক্ষতা 86.48%
- অসীম দূরত্ব থেকে একটি একক ধনাত্মক আধানকে তড়িৎক্ষেত্রের কোন বিন্দুতে আনলে যে পরিমাণ কাজ সম্পন্ন হয়ে তাকে ঐ বিন্দুর বিদ্যুৎ বিভব বলে ।
- কোন পরিবাহীর মধ্য দিয়ে 1.0 sec সময়ের 1.0 অ্যাম্পিয়ার তড়িৎ প্রবাহ চালনা করলে পরিবাহীর মধ্যে যে পরিমাণ বিদ্যুৎ চার্জ প্রবাহিত হয় তাকে কুলম্ব বলে।
- 1834 খ্রিস্টাব্দে ফ্যারাডে প্রথম ধনাত্মক চার্জযুক্ত কণার নাম ক্যাটায়ন এবং ঋণাত্মক চার্জযুক্ত কণার নাম অ্যানায়ন দেন।
- ধাতু বা ধাতব সংকর তড়িৎ পরিবহণ করে। সমযোজী, তড়িৎযোজী এবং সন্নিবেশ সমযোজী বন্ধনযুক্ত কঠিন বস্তুর মধ্য দিয়ে তড়িৎ প্রবাহিত হয় না ।
- তড়িৎযোজী বন্ধনযুক্ত পদার্থ দ্রবণে এবং গলিত অবস্থায় তড়িৎ পরিবহন করে ।
- বিদ্যুৎ বিশ্লেষণকালে কোন পদার্থের আয়ন থেকে 1 মোল পদার্থকে সঞ্চিত করতে প্রয়োজনীয় বিদ্যুতের পরিমাণ সে পদার্থের যোজনীর সমান মোল ইলেকট্রন এর চার্জের সমান ।
- তড়িৎ বিশ্লেষণ থেকে জানা যায় ক্যাথোডে 1 মোল Ag, 1 মোল Cu এবং 1 মোল Cr এর সঞ্চিত হওয়ার কালে যথাক্রমে 96500C, 2×96500C এবং 3×96500C বিদ্যুৎ প্রযোজন হয়।
- ইলেকট্রনীয় পরিবাহীঃ ধাতুর মধ্যদিয়ে তড়িৎ শক্তি ইলেকট্রনের প্রবাহরূপে প্রবাহিত হয় । ধাতুর পরমাণুর বহিঃস্থ শক্তিস্তরের সঞ্চারণশীল ইলেকট্রন এর জন্য দায়ী। তাই ধাতুকে ইলেকট্রনীয় পরিবাহী বলে ।
- আয়নিক পরিবাহীঃ গলিত বা দ্রবীভূত আয়নিক যৌগ যেমন- অ্যাসিড, প্রবাহিত হয় আয়নের সাহায্যে, তাই একে আয়নিক পরিবাহী বলে ।
- তড়িৎবন্ধন যুক্ত পদার্থ দ্রবণে এবং গলিত অবস্থায় বিদ্যুৎ পরিবহন করে ।
- ক্যাথোড দিয়ে ইলেকট্রন দ্রবণে প্রবেশ করে।
- অ্যানোডে ইলেকট্রন ছেড়ে দিয়ে অ্যানায়ন জারণ বিক্রিয়ায় অংশগ্রহণ করে ।
- ক্যাথোডে ক্যাটায়ন ইলেকট্রন গ্রহন করে বিজারণ বিক্রিয়ায় অংশগ্রহন করে ।
- গলিত NaCl লবণ থেকে তড়িৎ বিশ্লেষণ পদ্ধতিতে Na ধাতু নিষ্কাশন করা হয় ডাউনের পদ্ধতি দ্বারা ।
- বক্সাইট থেকে তড়িৎ বিশ্লেষণের সাহায্যে অ্যালুমিনিয়াম ধাতু নিষ্কাশন করা হয়।
- ধাতুর ক্ষয়রোধ করার জন্য ইলেকট্রোলাইটিক পদ্ধতিতে অন্য ধাতুর প্রলেপ দেওয়া হয়।
- তড়িৎ বিশ্লেষণ পদ্ধতিতে সোডিয়াম নিষ্কাশনের সময় ক্যাথোডে সোডিয়াম এবং অ্যানোডে ক্লোরিন উৎপন্ন হয়।
- অপরিশোধিত তামাকে অ্যানোড হিসাবে ব্যবহার করে তড়িৎ বিশ্লেষণের সাহায্যে তামার বিশুদ্ধকরণ করা হয় ।
- ক্যাথোড দিয়ে ইলেকট্রন দ্রবণে প্রবেশ করে এবং অ্যানোড দিয়ে ইলেকট্রন দ্রবণে ছেড়ে দেয় ।
- ফ্যারাডের সূত্র কেবলমাত্র ইলেকট্রোলাইটিক পরিবহণের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য । ইলেকট্রনীয় পরিবহণের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য নয় ৷ যেহেতু এক কুলম্ব তড়িৎ দ্বারা পরিন্যস্ত পদার্থই তড়িৎ রাসায়নিক তুল্য, কাজেই রাসায়নিক তুল্য পরিমানের পদার্থ পরিন্যস্ত করার জন্য প্রয়োজনীয় বিদ্যুৎত্তের পরিমান হবে।
- ফ্যারাডের প্রথম সূত্রের গাণিতিক রূপ, W = ZIt.
- বক্সাইটের সংকেত: Al2O3.2H2O
- 1 আন্তর্জাতিক ওহম=1.00048 পরম ওহম।
- 1 আন্তর্জাতিক ভোল্ট=1.00034 পরম ভোল্ট ।
- নিকেল লবণের ক্ষেত্রে তড়িৎ সামর্থ্য 86.84 শতাংশ।
- তামার তড়িৎ বিশ্লেষণে 99.95% বিশুদ্ধ তামা পাওয়া যায়।
- হাইড্রোজেনের তড়িৎ রসায়নের তুল্যাংক = 0.0000104
এইচএসসি রসায়ন ২য় পত্রের ৪র্থ অধ্যায় তড়িৎ রসায়নের লেকচার শীটটি ডাউনলোড করুন :