রেইনকোট গল্পের অনুধাবন প্রশ্ন

এইচএসসি বাংলা ১ম পত্র রেইনকোট গল্পের অনুধাবনমূলক প্রশ্ন ও উত্তর PDF Download

Advertisements

এইচএসসি বাংলা ১ম পত্র রেইনকোট গল্পের অনুধাবন প্রশ্ন ও উত্তর PDF। তোমাদের জন্য আজকে নিয়ে আসলাম ১০০% কমন উপযোগী রেইনকোট গল্পের অনুধাবন প্রশ্ন ও উত্তর। এগুলো অনলাইনে পড়ার পাশাপাশি তুমি পিডিএফ ডাউনলোড করে অফলাইনে পড়তে পারবে । তাহলে চলো, শুরু করি রেইনকোট গল্পের অনুধাবন প্রশ্ন ও উত্তর PDF।।

রেইনকোট গল্পের অনুধাবন প্রশ্ন ও উত্তর PDF

০১। ‘ওই ঘরে আজকাল সহজে কেউ ঘেঁষে না।’-কেন?

উত্তর: ‘ওই ঘরে আজকাল সহজে কেউ ঘেঁষে না।’ বলতে ড. আফাজ আহমদের ঘরকে বোঝানো হয়েছে।

কলেজের পাশে প্রিনসিপ্যালের কোয়ার্টারের পাশে মিলিটারি ক্যাম্প হওয়ার কারণে ক্লাস বন্ধ। তবে শিক্ষকদের হাজিরা দিতে হয়। স্টাফ রুমে মুক্তিযোদ্ধাদের পক্ষে আলোচনা হলেও ড. আফাজের রুমে মুক্তিযোদ্ধাদের বিরুদ্ধে কথা বলা হতো এবং তাদের পতন নিয়ে ভবিষ্যদ্বাণী করত। তাই এই ঘরে আজকাল সহজে কেউ ঘেঁষে না।

Advertisements

০২। “রাশিয়ায় ছিল জেনারেল উইনটার, আমাদের জেনারেল মনসুন।”— উক্তিটি বিশ্লেষণ কর।[চ.বো.’২৩, ঢা.বো.’২২,১৯, রা.বো.’২২; কু.বো.’১৭]

উত্তর: “রাশিয়ায় ছিল জেনারেল উইনটার, আমাদের জেনারেল মনসুন”- বাক্যটির মাধ্যমে মুক্তিযুদ্ধের সময় মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য বর্ষা ঋতুর সহায়ক ভূমিকা প্রকাশ পেয়েছে।

আবহাওয়া জনিত কারণে বাংলায় প্রবল ঝড়-বৃষ্টি হয় বর্ষা ঋতুতে যার সাথে পাক-হানাদার বাহিনী নিজেদের মানিয়ে নিতে পারছিল না। ফলে তাদেরকে মুক্তিযোদ্ধাদের সাথে পাশাপাশি প্রবল ঝড়-বৃষ্টি আর বর্ষা ঋতুর সাথেও লড়তে হয়েছিল। ঠিক যেমনভাবে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় প্রচণ্ড শীতের কারণে জার্মান বাহিনী রাশিয়ার কাছে বিপর্যস্ত হয়েছিল।

০৩। “মনে হচ্ছে যেন বৃষ্টি পড়ছে ‘রেইনকোটের উপর’ –উক্তিটি দ্বারা লেখক কী বোঝাতে চেয়েছেন?[সি.বো., য.বো.’২৩; ব. বো., য.বো.’১৭]

উত্তর: নুরুল হুদার গায়ে চাবুকের আঘাতকে এখানে তুলনা করা হয়েছে রেইনকোটের ওপর বৃষ্টির ফোঁটা পড়ার মতো। মুক্তিযোদ্ধা শ্যালকের রেইনকোট গায়ে দিয়ে ভীরু প্রকৃতির নুরুল হুদার মাঝেও সাহস ও দেশপ্রেম সঞ্চারিত হয়। পাশাপাশি মুক্তিসেনারা পাকিস্তানি মিলিটারিদের কাছে কলেজের প্রফেসরদের মধ্যে তার নামই বলেছে জেনে তার ওপর মুক্তিসেনাদের আস্থার পরিচয় পেয়ে সে শিহরিত হয়। তাই পাকিস্তানিরা তার গা থেকে রেইনকোট খুলে নিলেও তার মনে হয় গায়ে রেইনকোটের ওম এখনো লেগে আছে। মিলিটারির চাবুকের আঘাতকে তাই তার কাছে মনে হয় রেইনকোটের ওপর বৃষ্টির ফোঁটা পড়ার মতো।

০৪। ঠান্ডা হাওয়ার ধাক্কা রেইনকোটের তাপে গরম হয়ে ওঠার কারণ কী? [কু.বো.’২৩]

উত্তর: ঠান্ডা হাওয়ার ধাক্কা রেইনকোটের তাপে গরম হয়ে উঠেছিল আতঙ্কে । বাস চলতে চলতে এমন এক স্থানে এসে দাঁড়ায় যেখানে বাঁয়ের দিকে একটি নির্মাণাধীন মসজিদ ছিল। এই মসজিদের ছাদের দিক তাকিয়ে নুরুল হুদার মনে পড়ে ক্রাক ডাউনের রাতে ভোর হলেই মিলিটারির গুলিতে এই মসজিদের মুয়াজ্জিন ছাদ থেকে পড়ে গিয়েছিল। এই ঘটনা মনে হতেই তার শরীরের তাপমাত্রা বেড়ে গিয়েছিল আতঙ্কে। কারণ সে ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী ছিল সে।

রেইনকোট গল্পের অনুধাবন প্রশ্ন ও উত্তর PDF

০৫। ‘ক্রাক-ডাউনের রাত’ বলতে কী বোঝায়? [ব.বো., দি.বো.’২৩; সি.বো.’১৯]

উত্তর: ক্রাকডাউনের রাত বলতে ২৫শে মার্চের কালো রাতকে বুঝানো হয়েছে।

১৯৭১ সালের ২৫শে মার্চ দিবাগত রাতে পাকিস্তানি সেনাবাহিনী ঢাকায় ভয়াবহ ধ্বংসযজ্ঞ ও গণহত্যা পরিচালনা করে। এই রাতে তারা শত শত নিরীহ নিরস্ত্র বাঙালিকে নির্মমভাবে হত্যা করে। গল্পে ক্রাকডাউনের রাত বলতে এই রাতকেই বুঝানো হয়েছে।

০৬। “ভালোই হলো। তোমার গোড়ালি পর্যন্ত ঢাকা পড়েছে। পায়েও বৃষ্টি লাগবে না।”— উক্তিটি ব্যাখ্যা কর।

উত্তর: উক্তিটি নুরুল হুদার স্ত্রী আসমার।

কলেজের ভেতর গ্রেনেড হামলার ঘটনার প্রেক্ষিতে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী কলেজের সকল শিক্ষককে তলব করলে সেখানে নুরুল হুদারও ডাক পড়ে। সে সময় বাইরে প্রবল বৃষ্টি ছিল। এই বৃষ্টিতে ছাতায় কুলাতো না। নুরুল হুদার স্ত্রী তার ভাই মিন্টুর রেইনকোট তাকে পরতে দিয়েছিল। মিন্টু তার চেয়ে লম্বা। তাই রেইনকোট দিয়ে নুরুল হুদার গোড়ালি পর্যন্ত ঢেকে গিয়ে ছিল। ফলে তার গায়ে বৃষ্টির পানি লাগার সম্ভাবনা ছিল না।

০৭। উর্দুর প্রফেসর আকবর সাজিদকে প্রিনসিপ্যাল আজকাল তোয়াজ করে কেন?- ব্যাখ্যা কর।[সি.বো.’২২]

উত্তর: প্রফেসরের কাছ থেকে উর্দু শেখার জন্য আফাজ আহমদ আকবর সাজিদকে তোয়াজ করেন।

ড. আফাজ আহমদ পাকিস্তানপন্থি হলেও উর্দু ভাষার ওপর তাঁর যথেষ্ট দখল নেই। কিন্তু মিলিটারিদের তোষামোদ করতে হলে উর্দু ভাষাতেই করতে হয়। তাই তিনি উর্দু শেখার চেষ্টা করেন এবং উর্দুর প্রফেসর আকবর সাজিদকে তোয়াজ করে চলেন।

আরো পড়ুন :

০৮। “ভোর রাত থেকে বৃষ্টি”–এই ‘বৃষ্টি’ সম্পর্কে নুরুল হুদার অভিব্যক্তি বর্ণনা কর। [ব.বো.’২২]

উত্তর: ১৯৭১ সালের অস্থির পরিস্থিতির মাঝে ভোররাত থেকে শুরু হওয়া বৃষ্টি নুরুল হুদার মনে স্বস্তির আভাস নিয়ে এসেছিল। নুরুল হুদা বৃষ্টির ভাবগতিক দেখে মনে মনে হিসাব কষেছিলেন যে এই বৃষ্টির মেয়াদ কমপক্ষে তিনদিন। তিনি ধারণা করেন, এই তিনদিন অন্তত যুদ্ধ, গোলাগুলি বন্ধ থাকবে। আর তিনিও এই ফাঁকে নিশ্চিন্তে একটু আরাম করতে পারবেন।

রেইনকোট গল্পের অনুধাবন প্রশ্ন ও উত্তর PDF

০৯। “দেশে একটা কলেজে শহিদ মিনার আর অক্ষত নাই।”— কেন? আলোচনা কর। [য.বো.’২২]

উত্তর: শহিদ মিনার গুলোকে পাকিস্তানিরা নিজেদের শরীরের কাঁটা মনে করায় মিলিটারিরা সব শহিদ মিনার ধ্বংস করে দিয়েছে। তাই একটাও শহিদ মিনার আর অক্ষত নেই ।

শহিদ মিনার ১৯৫২ সালের ভাষা আন্দোলনের চেতনা বহন করে। মুক্তিযুদ্ধকালে এটি বাঙালিদের প্রেরণার উৎস হয়ে দাঁড়ায়। তাই প্রিনসিপ্যাল আফাজ আহমদ পাকিস্তানিদের বোঝায় যে এটা হলো তাদের শরীরের কাঁটা। ফলে গ্রামে-গঞ্জে যেখানেই মিলিটারি গেছে, প্রথমেই শহিদ মিনার ধ্বংস করেছে। তাই একটা স্কুল-কলেজেও আর শহিদ মিনার আস্ত নেই ।

১০। “এগুলো হলো পাকিস্তানের শরীরের কাঁটা।”—কথাটি বুঝিয়ে লিখ।

উত্তর: এখানে শরীরের কাঁটা বলতে শহিদ মিনারকে বোঝানো হয়েছে।

প্রিনসিপ্যাল ড. আফাজ পাকিস্তানিদের দোসর ছিলেন। তিনি নানাভাবে পাকিস্তানিদের সাহায্য সহযোগিতা করতেন। তিনি জানেন ভাষাআন্দোলনের স্মৃতি বহনকারী শহিদ মিনার মুক্তিযোদ্ধাদের পাকিস্তানি বাহিনীর বিরুদ্ধে লড়াই করতে উদ্বুদ্ধ করে। বাঙালির জাতীয়তাবোধ প্রকাশ পায় এই শহিদ মিনারগুলোর মাধ্যমে। তাই সকল স্কুল কলেজ থেকে শহিদ মিনার সরিয়ে দিতে পাকিস্তানিদের বুদ্ধি দেন ড. আফাজ আহমদ।

১১। “সত্যি বলেছে? আমার নাম বলেছে?”—নুরুল হুদার এ উত্তেজনার কারণ ব্যাখ্যা কর ।

উত্তর: কুলির ছদ্মবেশে আসা মুক্তিযোদ্ধারা মিলিটারিদের হাতে ধরা পরার পর কলেজের টিচারদের মধ্যে নুরুল হুদার নাম বলেছে জানতে পেরে সে উত্তেজিত হয়।

নুরুল হুদার কলেজের অফিসের জন্য যে আলমারি কেনা হয় তা পৌঁছে দিতে মুক্তিযোদ্ধারা কুলির ছদ্মবেশে কলেজে ঢোকে। সেসময় নুরুল হুদার সাথে তাদের একজনের কথা হয়। পরবর্তীতে মিলিটারিদের কাছে ধরা পড়ার পর তারা মিলিটারিদের কাছে কলেজের শিক্ষকদের মধ্যে নুরুল হুদার নাম বলেছে জানতে পেরে সে তার প্রতি মুক্তিযোদ্ধাদের আস্থার পরিচয় পায়। আর এ কারণেই সে মনে মনে উত্তেজিত হয়।

রেইনকোট গল্পের অনুধাবন প্রশ্ন ও উত্তর PDF

১২। “টুপির তেজ কি পানিতেও লাগল নাকি?”—ব্যাখ্যা কর। [ম.বো.’২২, চ.বো.’১৯]

উত্তর: মুক্তিযোদ্ধা শ্যালকের রেইনকোট গায়ে দিয়ে ভীরু প্রকৃতির নুরুল হুদার মাঝেও এক প্রকার তেজ অনুভূত হচ্ছিল। এ অনুভূতিরই বহিঃপ্রকাশ ঘটেছে প্রশ্নোক্ত উক্তিটিতে।

প্রিনসিপ্যালের ডাকে নুরুল হুদাকে বৃষ্টির মধ্যেই কলেজের উদ্দেশ্যে রওনা দিতে হলে তার স্ত্রী তাকে তার মুক্তিযোদ্ধা ছোটো ভাইয়ের রেখে যাওয়া রেইনকোটটি পরিয়ে দেয়। সেই রেইনকোটের টুপিটি ছিল বারান্দা ওয়ালা। সেখান থেকে চুইয়ে পড়া এক ফোঁটা পানি নুরুল হুদা চেখে দেখে এবং তার মনে হয় তার শ্যালকের মতো তেজ এই পানিতেও পাওয়া যাচ্ছে। সে ভাবে, সে নিজেও যেহেতু রেইনকোট পরে আছে তাহলে তাকেও নিশ্চয়ই তেজোদীপ্ত দেখাচ্ছে।

১৩। নুরুল হুদার কাছে কোন বিষয়টিকে ‘স্রেফ উৎপাত’ বলে মনে হয়? ব্যাখ্যা কর। [ব. বো.’১৯]

উত্তর: চাবুকের বাড়িকে নুরুল হুদার কাছে স্রেফ উৎপাত বলে মনে হয় ।

মুক্তিযোদ্ধা শ্যালকের রেইনকোট গায়ে দিয়ে ভীরু প্রকৃতির নুরুল হুদার মাঝে সাহস সঞ্চারিত হয়। অপরদিকে মুক্তিযোদ্ধারা ধরা পড়ার পর কলেজের প্রফেসরদের মধ্যে তার নাম বলেছে শুনে তার ওপর মুক্তিবাহিনীর আস্থা দেখে সে শিহরিত হয়। তাই যখন পাকিস্তানি মিলিটারি তাকে ছাদের সাথে ঝুলিয়ে দিয়ে চাবুক মারে-সেই আঘাতকে তার কাছে স্রেফ উৎপাত বলে মনে হয়।

১৪। “ড্রেসিং টেবিলের সামনে দাঁড়িয়ে নিজের নতুনরূপে সে ভ্যাবাচ্যাকা খায়।”–কে, কেন ভ্যাবাচ্যাকা খায়? [য. বো.’১৯]

উত্তর: রেইনকোট গায়ে দিয়ে নুরুল হুদার মধ্যে যে পরিবর্তন এসেছে, আয়নায় তা দেখে সে নিজেই ভ্যাবাচ্যাকা খায়। বৃষ্টির মধ্যে কলেজে যেতে হবে বলে নুরুল হুদার স্ত্রী তাকে জোর করে তার ছোটো ভাই মিন্টুর রেখে যাওয়া রেইনকোট পরিয়ে দেয়। রেইনকোট পড়া নুরুল হুদাকে দেখে তার মেয়ে তাকে ছোটোমামার মতো লাগছে বলে জানায় এবং তার পাঁচ বছরের ছেলে সিদ্ধান্ত দেয় যে, সে মুক্তিবাহিনী। এসব শুনে পাকিস্তানিরাও তাকে মুক্তিবাহিনী ভেবে বসে কি-না সেই চিন্তায় নুরুল হুদা ভাবনায় পড়ে যায়। তাই সে ড্রেসিং টেবিলের আয়নায় নিজের চেহারা দেখে এবং নিজের নতুন রূপ দেখে সে নিজেও ভ্যাবাচ্যাকা খায়।

এইচএসসি বাংলা ১ম পত্র রেইনকোট গল্পের অনুধাবন প্রশ্ন ও উত্তর PDF Download

Facebook
X
LinkedIn
Telegram
Print

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Stay Connected

Subscribe our Newsletter

Scroll to Top