HSC বাক্য রূপান্তর

এইচএসসি বাংলা ২য় পত্র বাক্যতত্ত্ব (বাক্য রূপান্তর) ২০২৫ PDF

Advertisements

HSC বাক্য রূপান্তর (বাক্যতত্ত্ব) : ব্যক্য রূপান্তর বা বাক্য পরিবর্তন এইচএসসি শিক্ষার্থীদের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটি টপিক, এখান থেকে প্রতিবছরই প্রশ্ন আসে। সরল বাক্য থেকে জটিল ব্যক্য, জটিল বাক্য থেকে যৌগিক বাক্য রূপান্তরের বিভিন্ন নিয়ম তুলে ধরা হলো। তাহলে চলো, HSC বাক্য রূপান্তর এর লেকচারটি পড়ে ফেলি।


HSC বাক্য রূপান্তর ২০২৫ PDF

১। গঠন অনুসারে বাক্যের শ্রেণিবিভাগ উদাহরণসহ আলোচনা কর।
বা,
বাক্য কাকে বলে? একটি সার্থক বাক্যের কী কী গুণ থাকা আবশ্যক? উদাহরণসহ লেখো।

উত্তর: বাক্য: এক বা একাধিক পদের (বিভক্তিযুক্ত শব্দ) সমন্বয়ে যখন বক্তার মনের ভাব সম্পূর্ণরূপে প্রকাশ পায়, তখন তাকে বাক্য বলে। যেমন: বাংলাদেশ একটি স্বাধীন সার্বভৌম রাষ্ট্র। এখানে ‘বাংলাদেশ’, ‘একটি’, ‘স্বাধীন’, ‘সার্বভৌম’, ‘রাষ্ট্র- এ পাঁচটি পদ মিলে একটি সম্পূর্ণ মনের ভাব প্রকাশ পেয়েছে। সুতরাং এটি একটি বাক্য।

গঠন অনুসারে বাক্যের প্রকারভেদ: গঠন অনুসারে বাক্য তিন প্রকার। যথা:

Advertisements

গঠন অনুসারে বাংলা বাক্য ৩ প্রকার। যথা-

১।সরল বাক্য,
২। জটিল বাক্য এবং
৩। যৌগিক বাক্য।

১) সরল বাক্য- যে বাক্যে একটিমাত্র সমাপিকা ক্রিয়া থাকে তাকে সরল বাক্য বলে। যেমন- রাম বিদ্যালয়ে যায়। এই বাক্যটিতে সমাপিকা ক্রিয়াটি হল ‘যায়’।

২) জটিল বাক্য- যে বাক্যে একাধিক খণ্ডবাক্য একটির সঙ্গে আরেকটি সম্পর্কযুক্ত থাকে তাকে জটিল বাক্য বলে। খণ্ডবাক্যদুটির একটি প্রধান আর একটি অপ্রধান। প্রধান খণ্ডবাক্যের উপর অপ্রধান খণ্ডবাক্যটি নির্ভরশীল থাকে। যেমন- আমি যখন কলেজ যাই রাম তখন বিদ্যালয়ে যায়। এই বাক্যের প্রথম অংশটি দ্বিতীয় অংশের উপর নির্ভরশীল।

৩) যৌগিক বাক্য- একাধিক সরল বাক্য যখন এবং, কিন্তু, অথবা প্রভৃতি অব্যয় দ্বারা যুক্ত হয় তখন সেই বাক্যকে বলে যৌগিক বাক্য বলে। যেমন- আমি কলেজ যাই এবং রাম বিদ্যালয় যায়। এই বাক্যে দুটি সরল বাক্য ‘এবং’ দ্বারা যুক্ত হয়েছে কিন্তু কেউ কারো উপর নির্ভরশীল নয়।

২। আবেগ শব্দ বলতে কী বোঝ? উদাহরণসহ আবেগ শব্দের শ্রেণিবিভাগ আলোচনা কর। (HSC বাক্য রূপান্তর)

উত্তরঃ যেসব শব্দের মাধ্যমে মনের নানা আবেগ ও ভাব প্রকাশিত হয় তাদেরকে আবেগ-শব্দ বলে। এরা বাক্যে স্বাধীনভাবে ব্যবহৃত হয় অন্য পদের সাথে এদের কোনাে সম্পর্ক নেই। প্রকাশভঙ্গি অনুসারে আবেগ-শব্দকে কয়েক ভাগে ভাগ করা যায়।

যেমন:

ক. সিদ্ধান্তবাচক আবেগ-শব্দ: অনুমােদন, সম্মতি, সমর্থন ইত্যাদি ভাব প্রকাশ করতে এ জাতীয় আবেগ-শব্দ ব্যবহৃত হয়। যেমন: হু, যুক্তিটা ভালােই মনে হচ্ছে।

খ. প্রশংসাবাচক আবেগ-শব্দ: এ জাতীয় আবেগ-শব্দের সাহায্যে প্রশংসা বা তারিফের মনােভাব প্রকাশিত হয়। যেমন: শাবাশ! দেখার মতাে একটা ছক্কা হাকালে। বাঃ! তুমি তাে অসাধারণ গাইতে পার।

গ. বিরক্তিসূচক আবেগ-শব্দ: এ ধরনের আবেগ-শব্দের মাধ্যমে অবজ্ঞা, ঘৃণা, বিরক্তি। ইত্যাদি মনােভাব প্রকাশ করা হয়। যেমন: ছিঃ ছিঃ ! এত নীচ তুমি হতে পারলে। কী জ্বালা! লােক যে পিছু ছাড়ে না।

ঘ. ভয় ও যন্ত্রণাবাচক আবেগ-শব্দ: এ ধরনের আবেগ-শব্দের সাহায্যে আতঙ্ক, যন্ত্রণা। কাতরতা ইত্যাদি ভাব প্রকাশিত হয়। যেমন: উঃ! কী ব্যথা। আঃ! কী মুছিবত।

ঙ. বিস্ময়বাচক আবেগ-শব্দ: এ ধরনের আবেগ-শব্দ বিস্মিত বা আশ্চর্য হওয়ার ভাৰ প্রকাশ করে থাকে। যেমন: আরে, তুমি না চলে গেলে! আঁ, বলছাে কী? ও এখনাে বেঁচে আছে!

চ. করুণাবাচক আবেগ-শব্দ: করুণা, সহানুভূতি ইত্যাদি মনােভাব প্রকাশে এ ধরনের আবেগ-শব্দ ব্যবহৃত হয়। যেমন : আহা! মা-হারা ছেলেটির দেখার কেউ নেই। হায়! হায়! এখন সে কোথায় যাবে।

ছ. সম্বােধনবাচক আবেগ-শব্দ: সম্বােধন বা আহ্বান করার ক্ষেত্রে এ ধরনের আবেগ-শব্দ। ব্যবহৃত হয়। যেমন: ওগাে, আজ তােরা যাস নে ঘরের বাহিরে। হে বৎস, সদা সত্য কথা বলাে।

জ. অলংকারিক আবেগ-শব্দ: এ ধরনের আবেগ-শব্দ বাক্যের অর্থের পরিবর্তন না ঘটিয়ে কোমলতা, মাধুর্য ইত্যাদি বৈশিষ্ট্য এবং সংশয়, অনুরােধ, মিনতি ইত্যাদি মনােভাব প্রকাশের জন্য অলংকার হিসেবে ব্যবহৃত হয়। দুর পাগল! এ আবার বলতে হয় । যাকগে যাক, ওসব নিয়ে আমার মাথা ব্যথা নেই ।

৩। যোজক কী? উদাহরণসহ যোজক-এর শ্রেণিবিভাগ দেখাও। (HSC বাক্য রূপান্তর)

উত্তর: যে শব্দ একটি বাক্য বা বাক্যাংশের সঙ্গে অন্য একটি বাক্য বা বাক্যাংশের কিংবা বাক্যস্থিত একটি শব্দের সঙ্গে অন্য শব্দের সংযোজন, বিয়োজন বা সংকোচন ঘটায় তাকে যোজক বলে। যেমন: আমি গান গাইব আর তুমি নাচবে।

অর্থ এবং সংযোজনের ধরন ও বৈশিষ্ট্য অনুযায়ী যোজক শব্দ পাঁচ প্রকার। এগুলো নিম্নরূপ-

ক. সাধারণ যোজক: যে যোজক দ্বারা একাধিক শব্দ, বাক্য বা বাক্যাংশকে সংযুক্ত করা যায় তাকে সাধারণ যোজক বলে। যেমন: আমি ও আমার বাবা বাজারে এসেছি।
খ. বৈকল্পিক যোজক: যে যোজক দ্বারা একাধিক শব্দ, বাক্য বা বাক্যাংশের মধ্যে বিকল্প বোঝায় তাকে বৈকল্পিক যোজক বলে। যেমন: তুমি বা তোমার বন্ধু যে কেউ এলেই হবে।
গ. বিরোধমূলক যোজক: এ ধরনের যোজক দুটি বাক্যের সংযোগ ঘটিয়ে দ্বিতীয়টি দ্বারা প্রথমটির বিরোধ নির্দেশ করে। যেমন: আমি চিঠি দিয়েছি কিন্তু উত্তর পাইনি।
ঘ. কারণবাচক যোজক: এ ধরনের যোজক এমন দুটি বাক্যের মধ্যে সংযোগ ঘটায় যার একটি অন্যটির কারণ। যেমন: আমি যাইনি, কারণ তুমি দাওয়াত দাওনি।
ঙ. সাপেক্ষ যোজক: পরস্পর নির্ভরশীল যে যোজকগুলো একে অন্যের পরিপূরক হিসেবে বাক্যে ব্যবহৃত হয় তাদের সাপেক্ষ যোজক বলে। যেমন: যদি টাকা দাও তবে কাজ হবে।


আরো পড়ুন:


৪। অর্থ অনুসারে বাক্যের শ্রেণিবিভাগ উনারেলসহ আলোচনা কর।

উত্তর: বাক্য শব্দটির ব্যুৎপত্তিগত অর্থ কথ্য বা কথিত বিষয়। যে সুবিন্যস্ত পদসমষ্টি বক্তার কোন মনোভাবকে সম্পূর্ণরূপে প্রকাশ করে তাকে বাক্য বলে।

বাক্যের মৌলিক উপাদান শব্দ।
ভাষার মূল উপকরণ বাক্য।

বাক্যের গুণ
ভাষার বিচারে বাক্যের তিনটা গুণ থাকা আবশ্যক। যথাঃ

১) আকাঙ্ক্ষাঃ বাক্যের অর্থ পরিষ্কার ভাবে বোঝার জন্য এক পদের পর অন্য পদ শোনার যে ইচ্ছা তা-ই আকাঙ্ক্ষা । উদাহরণঃ মা আমাকে অনেক আদর …

উপরের বাক্যে বক্তার মনোভাব সম্পূর্ণ প্রকাশ করছে না। বাক্য শেষ হওয়ার পরও আরো কিছু শোনার আকাঙ্ক্ষা থেকে যাচ্ছে। সুতরাং, বাক্যের আকাঙ্ক্ষা গুণটি নেই। তাই এটি বাক্য নয়।

সম্পূর্ণ বাক্যটি হবে মা আমাকে অনেক আদর করে।

এটি শোনার পর আর কিছু শোনার আগ্রহ বাকি থাকছে না। সুতরাং এটি আকাঙ্ক্ষা গুণ সম্পন্ন একটি সার্থক বাক্য।

২) আসত্তিঃ বাক্যে অর্থসঙ্গতি রক্ষার জন্য সুশৃঙ্খল পদবিন্যাসই আসত্তি। উদাহরণঃ আছে কলম আমার একটি। বাক্যের পদগুলো সুশৃঙ্খলভাবে সাজানো হয়নি। এই পদগুলো সুশৃঙ্খলভাবে সাজালে বাক্যটি হবে— আমার একটি কলম আছে। যা একটি ভাবকে প্রকাশ করছে।

৩)যোগ্যতাঃ বাক্যস্থিত পদসমূহের অর্থগত এবং ভাবগত মিলবন্ধনের নাম যোগ্যতা।

উদাহরণঃমাছ আকাশে উড়ে। কিন্তু মাছের আকাশে উড়ার যোগ্যতা নেই। সুতরাং বাক্যটি যোগ্যতাহীন। অতএব বাক্যটি হবে পাখি আকাশে উড়ে।

যোগ্যতার সাথে জড়িত বিষয়গুলো হচ্ছে –

i.. উপমার ভুল প্রয়োগ
ii. দুর্বোধ্যতা
iii. রীতিসিদ্ধ অর্থবাচকতা
iv. বাহুল্য-দোষ
v. গুরুচণ্ডালী দোষ
vi. বাগধারার শব্দ পরিবর্তন

৫। অর্থানুসারে বাংলা বাক্যের শ্রেণিবিভাগ উদাহরণসহ লেখো।

উত্তর: বাক্য: এক বা একাধিক পদের (বিভক্তিযুক্ত শব্দ) সমন্বয়ে যখন বস্তার মনের ভাব সম্পূর্ণরূপে প্রকাশ পায়, তখন তাকে বাক্য বলে। যেমন: বাংলাদেশ একটি স্বাধীন সার্বভৌম রাষ্ট্র।

এখানে ‘বাংলাদেশ’, ‘একটি’, ‘স্বাধীন’, ‘সার্বভৌম’, ‘রাষ্ট্র- এ পাঁচটি পদ মিলে একটি সম্পূর্ণ মনের ভাব প্রকাশ পেয়েছে। সুতরাং এটি একটি বাক্য।

অর্থানুসারে বাক্যের প্রকারভেদ: অর্থানুসারে বাক্যকে সাত ভাগে ভাগ করা যায়। যথাঃ ক. নির্দেশমূলক বা নির্দেশাত্মক; খ. জিজ্ঞাসাত্মক বা প্রশ্নবোধক; গ. অনুজ্ঞাসূচক বা আদেশবাচক; ঘ. ইচ্ছাপ্রকাশক বা প্রার্থনাসূচক; ১. কার্যকারণাত্মক বা অপেক্ষাসূচক; চ. সংশয়বাচক বা সন্দেহসূচক; ছ. আবেগসূচক বা উচ্ছ্বাসাত্মক।

ক. নির্দেশমূলক বা নির্দেশাত্মক: এ শ্রেণির বাক্যে সাধারণভাবে কোনো কিছুর বিবৃতি বা বর্ণনা নির্দেশিত হয়। নির্দেশাত্মক বাক্য আবার দ্বিবিধ। যেমন:

অন্ত্যর্থক (হ্যাঁ-বোধক): কোনো কিছুর অস্তিত্ব নির্দেশ করতে অন্ত্যর্থক বাক্য ব্যবহৃত হয়। যেমন: ‘সুবর্ণ একজন মেধাবী ছাত্র।’ ‘তসলিমা পরীক্ষায় প্রথম হয়েছে।’

নাস্ত্যর্থক (না-বোধক): কোনো কিছু অস্বীকার করতে নাস্তার্থক বাক্য ব্যবহৃত হয়। যেমন: ‘মিথ্যাবাদীকে কেউ বিশ্বাস করে না।’ ‘ওখানে বসার জায়গা নেই।’

খ. জিজ্ঞাসাত্মক বা প্রশ্নবোধক: এ শ্রেণির বাক্যে প্রশ্ন বা জিজ্ঞাসা করা বোঝায়। যেমন: ‘ট্রেন কি ছেড়েছে?’ ‘তুমি কি পাগল হয়েছ?’

গ. অনুজ্ঞাসূচক বা আদেশবাচক: এ শ্রেণির বাক্যে আদেশ, উপদেশ, নিষেধ, অনুরোধ ইত্যাদি বোঝায়। যেমন: ‘আপনি অনুগ্রহ করে সব খুলে বলুন।’ ‘কখনও মিথ্যা বলো না।’

ঘ. ইচ্ছাপ্রকাশক বা প্রার্থনাসূচক: এ শ্রেণির বাক্যে বক্তার কোনো কিছুর জন্যে প্রার্থনা করা বোঝায়। শুভ-অশুভ ইচ্ছা বোঝাতেও এ শ্রেণির বাক্য গঠিত হয়। যেমন: ‘সবার মঙ্গল হোক।’ ‘যদি প্রথম হতে পারতাম।’

ঙ. কার্যকারণাত্মক বা অপেক্ষাসূচক: এ শ্রেণির বাক্যে একটি ঘটনার ওপর আর একটি ঘটনার নির্ভরশীলতার সম্বন্ধ স্থাপিত হয়। যেমন: ‘বৃষ্টি না হলে ফসল পুড়ে যাবে।’ ‘আপনি না এলে ভালো লাগবে না।’

চ. সংশয়বাচক বা সন্দেহসূচক: এ শ্রেণির বাক্যে বক্তার মনের সংশয় বা সন্দেহ প্রকাশ পায়। যেমন: ‘আমার মনে হয় না, সে আসবে।’ ‘আছে কোথাও এইখানে।’ ‘আজ বোধ হয় বৃষ্টি হবে।’

ছ. আবেগসূচক বা উচ্ছ্বাসাত্মক: এ শ্রেণির বাক্যে আনন্দ, শোক, উৎসাহ, ঘৃণা, বিস্ময়, কাতরতা, ভয় প্রভৃতি প্রকাশ পায়। যেমন: ‘বাঃ! কী সুন্দর পাহাড়’ ‘হায় হায়! কী সর্বনাশ ঘটল!’ ‘ছিঃ! তুমি এ কাজ করতে পারলে।’


এইচএসসি বাংলা ২য় পত্র বাক্যতত্ত্ব (বাক্য রূপান্তর) ২০২৫ PDF | HSC বাক্য রূপান্তর ২০২৫ PDF Download

Facebook
X
LinkedIn
Telegram
Print

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Stay Connected

Subscribe our Newsletter

Scroll to Top