পরিবেশ রসায়ন

এইচএসসি রসায়ন ২য় পত্রে ১ম অধ্যায় পরিবেশ রসায়নের নোট ২০২৫ PDF Download

Advertisements

এইচএসসি রসায়ন ২য় পত্রের ৫ম ১ম অধ্যায় পরিবেশ রসায়নের নোটটি এমন ভাবে সাজানো হয়েছে যার মাধ্যমে তুমি বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় , মেডিকেল কলেজ পরিক্ষা ও ইন্জিনিয়ারিং পরিক্ষার প্রস্তুতি নিতে পারবে । এই লেকচারে অন্তর্ভুক্ত আছে পরিবেশ রসায়ন: গ্যাস সূত্রসমূহ, বায়ুমন্ডলের পরিচিতি, ভারী ধাতুর যুক্ত হওয়ার কারণ ও প্রভাব (As, Cr, Pb, Cd), সারফেস ওয়াটারের বিশুদ্ধতার মানদণ্ড, CFC, গ্রীনহাউস গ্যাস, এসিড ক্ষারকের বিভিন্ন মতবাদ, MCQ ও সৃজনশীল প্রশ্নোত্তর pdf । তাই আর দেরি না করে আমাদের পরিবেশ রসায়নের লেকচার শীটটি পড়ে ফেলুন ।।

পরিবেশ রসায়ন

বায়ুমন্ডল বা atmosphere & Composition of Atmosphere

বায়ুমন্ডলের পরিচিতিঃ পৃথিবীর চারদিকে অদৃশ্য গ্যাসের যে আবরণী ভূ-পৃষ্ঠ থেকে প্রায় 500km এর অধিক উচ্চতা পর্যন্ত

বিস্তৃত, সেটাই বিজ্ঞানীদের কাছে বায়ুমন্ডল বা atmosphere নামে পরিচিত

বায়ুমন্ডলের সংযুক্তিঃ

  • N2 গ্যাস 78.09%
  • 02 গ্যাস 20.94%
  • CO2 গ্যাস 0.33%
  • বায়ুমন্ডলের গ্যাসীয় পদার্থের মোট ভর প্রায় 5.0 x 10 kg বা 5.0 x 10 ton
  • বায়ুমন্ডলের চাপ প্রতি বর্গ ইঞ্চিতে ১৪.৭ পাউন্ড বা প্রতি বর্গ সেন্টিমিটারে 1.033kg মাত্র।
  • বর্তমানে পৃথিবীর গড় তাপমাত্রা ≈ 15°C ।

বায়ুমন্ডলের বৈশিষ্ট্য: পরিবেশ রসায়ন

Advertisements

ভূপৃষ্ঠ থেকে উচ্চতা বৃদ্ধির সাথে বায়ুমন্ডলের ঘনত্ব অধিক হ্রাস পায়।

বায়ুমন্ডলের গুরুত্ব

  • বায়ুমন্ডলের বিভিন্ন গ্যাস, যেমন: CO2, জলীয়বাষ্প ও জৈব-অজৈব পদার্থের ভাসমান কণাগুলো সূর্য রাশির তাপ শোষণ করে বায়ুমন্ডলকে উত্তপ্ত রাখে। ফলে পৃথিবীতে মানুষসহ সমগ্র জীবজগতের বেঁচে থাকার পক্ষে অনুকুল তাপমাত্রা বজায় থাকে ( যেমন বর্তমানে পৃথিবীর গড় তাপমাত্রা ≈ 15°C । যদি বায়ুমন্ডলে CO, ও জলীয় বাষ্প (H,Oঅণু) না থাকত তবে পৃথিবী পৃষ্ঠ ও তৎসংলগ্ন বায়ুমন্ডলের গড় তাপমাত্রা- 30° C হতো। তখন প্রাণিকুল থাকত না।
  • ভাসমান এ কণাগুলোতে জলীয় বাষ্প ঘনীভূত হয়ে বৃষ্টিপাত ঘটায়।
  • এ বায়ুমন্ডল সূর্যরশ্মির UV রশ্মিকে শোষণ করে পৃথিবীর প্রাণিকুলকে এর ক্ষতিকর প্রভাব থেকে মুক্ত রাখে ।
  • সবুজ উদ্ভিদ CO2 ও পানি H20 থেকে শর্করা ও O, উৎপন্ন করে । মাটির ব্যাকটেরিয়া বায়ুর N, শোষণ করে তাকে নাইট্রেট লবণ রূপে উদ্ভিদকে যোগান দিয়ে প্রোটিন উৎপাদনে সহায়তা করে ।

বায়ুমন্ডল অঞ্চলসমূহ

পরিবেশ রসায়নের বায়ুমন্ডলকে চাপ ও তাপমাত্রার পরিবর্তন অনুসারে চারটি স্তর বা অঞ্চলে ভাগ করা

যেমন,

(১) ট্রপোস্ফিয়ার,

(২) স্ট্র্যাটোস্ফিয়ার,

(৩) মেসোস্ফিয়ার

(৪) থার্মোস্ফিয়ার।

ট্রপোস্ফিয়ার

  • ভূপৃষ্ঠ থেকে 15km উচ্চতা পর্যন্ত বায়ুমন্ডলের স্তরকে ট্রপোস্পিয়ার (troposhere) বলে। এ স্তরের বায়ুচাপ 760 mm (Hg) থেকে ওপর দিকে কমতে থাকে এবং তা 15km উচ্চতায় প্রায় 100mm (Hg) বায়ুচাপ থাকে। এতে তাপমাত্রাও ওপর দিকে কমতে থাকে। প্রতি কিলোমিটার উচ্চতায় তাপমাত্রা 7° C হারে হ্রাস পেয়ে 12km উচ্চতায় প্রায় – 55°C (বা, 218K) পর্যন্ত হয়।
  • এ ট্রপোস্পিয়ারে ঝড়, ঝঞ্চা, প্রভৃতি প্রাকৃতিক বিপর্যয় ঘটে।
  • প্রায় সব ধরনের বিমান এ অঞ্চলেই চলাচল করে। তাই ট্রপোস্ফিয়ারকে ক্ষুব্ধ মন্ডলও বলা হয় ।
  • ট্রপোস্ফিয়ার ও পরবর্তী স্ট্র্যাটোস্ফিয়ারের মধ্যবর্তী বায়ুর পাতলা স্তরে তাপমাত্রার অবস্থান্তর বা বৈপরীত্য ঘটে, এ উভয় অঞ্চলের মধ্যবর্তী বায়ুর পাতলা স্তরকে ‘ট্রপোপাউজ (tropopause) বলে। বায়ুমন্ডলের ঊর্ধ্ব দিকে তাপমাত্রার পরিবর্তনকে ‘ল্যাপস-রেট (lapse-rate) বলে । ট্রপোস্ফিয়ারে তাপমাত্রার ক্রম হ্রাসকে স্বাভাবিক ধরে একে Positive (+) lapse rate বলে।

আরো পড়ুন :

স্ট্র্যাটোস্পিয়ার

  • ট্রপোস্ফিয়ারের পর ওপর দিকে 15km থেকে 50km উচ্চতা পর্যন্ত বায়ুমন্ডলের ২য় স্তর স্ট্র্যাটোস্ফিয়ার (stratoshere) 35km বিস্তৃত। এ স্ট্র্যাটোস্পিয়ারে তাপমাত্রা – 55°C(218K) থেকে ক্রমশ বৃদ্ধি পেয়ে 50km উচ্চতায় 2°C (বা 275K) তাপমাত্রায় পৌঁছে। স্ট্র্যাটোস্ফিয়ার উচ্চতা বৃদ্ধির সাথে তাপমাত্রার ক্রম বৃদ্ধিকে Negative (-) lapse rate বলে। কিন্তু গ্যাসের ঘনত্ব ও চাপমাত্রা ট্রপোস্ফিয়ারের মতো ওপর দিকে একইভাবে কমতে থাকে । ফলে চাপ 10mm (Hg) থেকে 1mm (Hg) হয়ে থাকে। ।
  • স্ট্র্যাপোস্ফিয়ার অঞ্চলে ঝড় বৃষ্টি না থাকায় স্ট্র্যাটোস্ফিয়ারকে শান্তমন্ডলও বলা হয়। স্ট্র্যাটোস্ফিয়ারে আবহাওয়া শুল্ক ও শান্ত থাকায় এ অঞ্চল দিয়ে জেট বিমান চলাচল করে থাকে। [সাধারণ বিমানসমূহ আকাশে 40,000ft থেকে 42,000ft বা, 12.2km থেকে 12.8km উচ্চতায় চলাচল করে থাকে।
  • স্ট্র্যাটোস্ফিয়ার সূর্যের আলোর মধ্যস্থ ক্ষতিকারক UV- রশ্মি শোষণকারী ওজোন (O3) স্তর অক্সিজেন (O2) থেকে সৃষ্টি হয়। ওজোন দ্বারা UV রশ্মি শোষণের ফলে এ স্তরে তাপমাত্রার বৃদ্ধি ঘটে। এ ওজোন স্তর ছাতার মতো পৃথিবীকে আচ্ছাদান করে রাখে।

মেসোস্ফিয়ার

বায়ুমন্ডলের ৩য় স্তর হলো 50km – 85km পর্যন্ত বিস্তৃত মেসোস্ফিয়ার (mesophere)।

  • ষ্ট্যাটোস্ফিয়ার থেকে মেসোস্ফিয়ারকে পৃথক করে রেখেছে ‘স্ট্র্যাটোপাউচ’ (stratopause) নামক পাতলা অবস্থান্তর বায়ুস্তর। এ স্তরের শুরু থেকে পূর্বের বিপরীত নিয়মে তাপমাত্রা হ্রাস পেতে থাকে এবং 83km উচ্চতায় – 90°C (বা, 180K) তাপমাত্রায় বায়ুমন্ডল শীতলতম অবস্থায় পৌঁছে।
  • মেসোস্ফিয়ারে তাপমাত্রা হ্রাসের কারণ হলো এ অঞ্চলে UV রশ্মি শোষণকারী (O3) ও অন্যান্য রাসায়নিক পদার্থের অনুপস্থিতি । ট্রপোস্ফিয়ারের মতো মেসোস্ফিয়ারের তাপমাত্রার ক্রম হ্রাসের ঘটনাকে Positive (+) lapse rate বলে ।
  • মেসোস্ফিয়ারের শেষ প্রান্তে রয়েছে ‘মেসোপাউজ’ নামক পাতলা অবস্থান্তর বায়ুস্তর।
  • এর পরে রয়েছে আয়োনোস্ফিয়ার বা থার্মোস্ফিয়ার।

থার্মোস্ফিয়ার

বায়ুমন্ডলের ৪র্থ স্তর হলো থার্মোস্ফিয়ার (thermosphere); এটি 500km উচ্চতা পর্যন্ত বিস্তৃত ।

  • এ স্তরে বিপরীতভাবে তাপমাত্রা- – 93° C (বা, 180K) থেকে বৃদ্ধি পেয়ে থার্মোস্ফিয়ারে সৌরবিকিরণ মাত্রার ওপর নির্ভর করে 427°C (বা, 700) থেকে 1727° C (বা, 2000K) এর মধ্যে পরিবর্তিত হয় ।
  • থার্মোস্ফিয়ারে আলো শক্তির যেমন উচ্চশক্তিসম্পন্ন UV-রশ্মির (A=< 200nm) প্রভাবে গ্যাসীয় অণুর বিয়োজন ও ইলেকট্রন স্থানান্তরের ফলে বিভিন্ন ধণাত্মক আয়ন, পরমাণুর ও অণুর মিশ্রণ থাকে। তাই এ অঞ্চলকে আয়নোস্ফিয়ারও বলা হয়। এ অঞ্চল থাকে বিভিন্ন ধনাত্মক আয়ন যেমন N,’,O,’,NO’,H’,He* আয়ন ইত্যাদি ।
  • এরপর ওপর দিকে রয়েছে অধিক তাপমাত্রার এক্সোস্ফিয়ার (exosphese)। এক্সোস্ফিয়ারে H ও He গ্যাসের পরিমাণ বেশি থাকে ।
  • এক্সোস্ফিয়ারের ওপর দিকে রয়েছে চৌম্বকস্ফিয়ার। প্রোটন ও ইলেকট্রনের চৌম্বকক্ষেত্রের সমন্বয়ে সৃষ্ট এ চৌম্বক ক্ষেত্র বায়ুমন্ডলকে ঘিরে রাখে

গ্যাসের আণবিক গতিতত্ত্বের স্বীকার্যগুলো নিম্নরূপ

  • যে কোন গ্যাস অসংখ্য, সূক্ষ্মাতিসূক্ষ্ম কণিকার সমন্বয়ে গঠিত। যেকোন নির্দিষ্ট গ্যাসের কণিকাসমূহের ভর পরস্পর সমান।
  • অণুসমূহের মোট আয়তন গ্যাসধারের আয়তনের তুলনায় নগন্য।
  • অণুসমূহের নিজেদের মধ্যে বা অণু ও গ্যাসধারের দেয়ালের মধ্যে কোন আকর্ষণ-বিকর্ষণ নেই ৷
  • গ্যাসের অণুসমূহ সবসময় খুব দ্রুতগতিতে সম্ভাব্য সবদিকে সোজাপথে ইতস্ততঃ ছোটাছুটি করে, ফলে অণুসমূহের সংঘর্ষ ঘটে;
  • এ সংঘর্ষের ফলে অণুসমূহের গতির দিক পরিবর্তিত হয়।
  • অণুসমূহ কঠিন, গোলাকার ও স্থিতিস্থাপক । সংঘর্ষের সময় গতিশক্তি বা অভ্যন্তরীন কোন শক্তিতে রূপান্তর হয় না অর্থাৎ সংঘর্ষসমূহ স্থিতিস্থাপক ।
  • গ্যাসমূহের দেয়ালের উপর অণুসমূহের অবিরাম সংঘর্ষের ফলে গ্যাস চাপের সৃষ্টি হয়।
  • অণুসমূহের মোট গতিশক্তি তথা প্রতিটি অণুর গড় শক্তি পরম তাপমাত্রার সমানুপাতিক।
  • যে কোন দুটি সংঘর্ষের মধ্যবর্তী পথ সরলরৈখিক, দুটো সংঘর্ষের মধ্যবর্তী দূরত্বের গড়মানকে গ্যাস অণুর গড় মুক্তপথ বলে । অণুসমূহের শুরু সংঘর্ষের জন্য যে সময় ব্যয় হয় তা দুটো সংঘর্ষের মধ্যবর্তী সময়ের তুলনায় নগন্য। গ্যাসের অণুগুলোর গতির উপর অভিকর্ষজ শক্তির কোন প্রভাব নেই ।
  • আন্তঃআণবিক সংঘর্ষ ও প্রকৃতিঃ গ্যাসের অণুগুলোর মধ্যে পরস্পরের সাথে বা পাত্রের দেয়ালের সাথে সংঘর্ষ ঘটে, তখন ঐ সংঘর্ষগুলোও সম্পূর্ণ স্থিতিস্থাপক হয় অর্থাৎ তাদের গতিশক্তি অভ্যন্তরীণ বা অন্য শক্তিতে রূপান্তরিত হয় না।
  • নির্দিষ্ট তাপমাত্রায় (T), গ্যাসের অণুগুলোর মোট গতিশক্তি (Ek) স্থির থাকে।
  • গ্যাসের অণুর গতিশক্তিঃ গ্যাসের অণুগুলোর গড় গতিশক্তি সংশ্লিষ্ট গ্যাসের কেলভিন তাপমাত্রার সমানুপাতিক।
  • গ্যাসের গতিতত্ত্ব হতে তাত্ত্বিকভাবে দেখানো যায় যে, যদি কোনো আদর্শ গ্যাসের আয়তন V, এর চাপ P, প্রতিটি গ্যাস অণুর ভর m, নমুনায় গ্যাস অণুর সংখ্যা N এবং গ্যাস অণুগুলোর বর্গমূল-গড়-বর্গ গতিবেগ c হয়. তবে PV=1/3mNc2।

এইচএসসি রসায়ন ২য় পত্রে ১ম অধ্যায় পরিবেশ রসায়নের লেকচার শীটটি ডাউনলোড করুন :

Facebook
X
LinkedIn
Telegram
Print

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Stay Connected

Subscribe our Newsletter

Scroll to Top