বাংলা উচ্চারণের নিয়ম

এইচএসসি বাংলা ২য় পত্রের বাংলা উচ্চারণের নিয়ম নোট ২০২৫ | PDF Download

Advertisements

বাংলা উচ্চারণের নিয়ম: বিগত সালের বিভিন্ন প্রশ্ন বিশ্লেষণ করে এখানে গুরুত্বপূর্ণ বাংলা উচ্চারণের নিয়ম দেওয়া হলো। প্রতিবছরই এখান থেকে প্রশ্ন থাকে, এগুলো পড়লে আর কোনো কিছু পড়তে হবে না। তাহলে চলো, শুরু করি।


বাংলা উচ্চারণের নিয়ম নোট ২০২৫

১। ম-ফলা বাংলা উচ্চারণের নিয়ম পাঁচটি উদাহরণসহ লেখ।

উত্তরঃ ম-ফলা উচ্চারণের ৫ টি নিয়ম নিচে দেওয়া হলোঃ

(১) পদের আদ্য ব্যঞ্জনবর্ণে ‘ম’-ফলা সংযুক্ত হলে সাধারণত তার কোন উচ্চারণ হয় না, তবে প্রমিত উচ্চারণে ‘ম’-ফলা যুক্ত বর্ণের উচ্চারণ সামান্য নাসিক্য প্রভাবিত হয়ে ওঠে। যথাঃ স্মরণ (শঁরোন্), শ্মশান (শঁশান্), স্মৃতি (সৃঁতি), স্মারক (শাঁরোক্) ইত্যাদি।

Advertisements


২) পদের মধ্যে বা অন্তে ‘ম’-ফলা সংযুক্ত বর্ণের দ্বিত্ব উচ্চারণ হয়ে থাকে। যথাঃ ছদ্ম (ছদ্ দোঁ), পদ্ম (পদ্ দোঁ), আত্ম (আত্ তোঁ), অকস্মাৎ (অকোশ্ শাঁত্), ভস্ম (ভশ্ শোঁ), রশ্মি (রোশ্ শিঁ), মহাত্মা (মহাত্ তাঁ), আকস্মিক (আকোশশ্ শিঁক) ইত্যাদি।


(৩) কিন্তু বাংলা ভাষায় পদের মধ্যে কিংবা অন্তে সর্বত্র ‘ম’-ফলা যুক্ত ব্যঞ্জনবর্ণটির উচ্চারণ দ্বিত্ব হয় না; গ, ঙ, ট, ণ, ম এবং ল-এর সঙ্গে সংযুক্ত ‘ম’-এর উচ্চারণ সাধারণ অবিকৃত থাকে। যথাঃ বাগ্মী (বাগ্ মি), যুগ্ম (জুগ্ মো), বাঙ্ময় ( বাঙ্ ময়), উন্মাদ (উন্ মাদ), জন্ম (জন্ মো), সম্মান (শম্ মান্), গুল্ম (গুল্ মো) ইত্যাদি।


(৪) যুক্ত ব্যঞ্জনবর্ণের সঙ্গে সংযুক্ত ‘ম’-ফলার কোন উচ্চারণ হয় না। যথাঃ সূক্ষ্ম (শুক্ খোঁ), লক্ষ্মী (লোক্ খিঁ), লক্ষ্মণ (লক্ খোঁন্) ইত্যাদি।


(৫) এছাড়া বাংলা ভাষায় ব্যবহৃত ‘ম’-ফলা যুক্ত কতিপয় সংস্কৃত শব্দ আছে (কৃতঋণ শব্দ) যার বানান ও উচ্চারণ সংস্কৃতি অনুযায়ী হয়। যথাঃ কুষ্মাণ্ড (কুশ্ মান্ ডো), স্মিত (স্মিতো), সুস্মিতা (শুস্ মিতা) ইত্যাদি।

২। ‘এ’ ধ্বনি উচ্চারণের পাঁচটি নিয়ম উদাহরণসহ লেখ

উত্তরঃ বাংলা ব্যাকরণ অনুসারে উদাহরণসহ ‘এ’ ধ্বনি বাংলা উচ্চারণের নিয়ম ৫টি নিয়ম নিম্নে উল্লেখ করা হলো:

১। শব্দের প্রথমে যদি এ-কার থাকে এবং তারপরে ই (ি), ঈ (ী), উ (ু), ঊ (ূ), এ (ে), ও (ো), য, র, ল, শ, এবং হ থাকলে সাধারণত ‘এ’ অবিকৃত ভাবে উচ্চারিত হয়। যেমন: তেল, মেকি, একি, প্রভৃতি।
২। শব্দের আদ্য এ-কারের পরে যদি ং, ঙ, ঙ্গ, থাকে এবং তারপরে ই, ঈ, উ, ঊ অনুপস্থিত থাকে, তবে সে ক্ষেএে ‘এ’ ‘অ্যা’ -কারে রুপান্তরিত হয়। যেমন: টেংরা, ট্যাঙ্গরা, প্রভৃতি।
৩। এ-কার যুক্ত একাক্ষর ধাতুর সঙ্গে আ-প্রত্যয় যুক্ত হলে সাধারণত সেই ‘এ’ কারের উচ্চারণ অ্যা-কার হয়ে থাকে। যেমন: ঠেলা – (ঠেল্ + আ) – এর উচ্চারিত রূপ ঠ্যালা, বেচা (বেচ্+আ)-এর উচ্চারিত রূপ ব্যাচা, প্রভৃতি।
৪। একাক্ষর সর্বনাম পদের ‘এ’ সাধারণত স্বাভাবিক ভাবে এ-কার রূপে উচ্চারিত হয়। যেমন: কে – কে, সে – শে, প্রভৃতি।
৫। সংস্কৃত বা তৎসম শব্দের আদ্য এ-কার সচরাচর অবিকৃত ‘এ’ রূপে উচ্চারিত হয়। যেমন: হেমন্ত, চেতন, প্রভৃতি।

৩। বাংলা ‘অ’ ধ্বনি উচ্চারণের যেকোনো পাঁচটি নিয়ম উদাহরণসহ লেখো।

উত্তরঃ বাংলা ‘অ’ ধ্বনি বাংলা উচ্চারণের নিয়ম নিচে তুলে ধরা হলো:

১. শব্দের শুরুতে ‘অ’-এর পরে য-ফলাযুক্ত ব্যঞ্জনবর্ণ থাকলে ‘অ’-এর উচ্চারণ ‘ও’-কারের মতো হয়। যেমন- অত্যাচার (ওত্তাচার), অধ্যক্ষ (ওদ্ধোকখো), অন্য (ওন্ নো) ইত্যাদি।
২. শব্দের শুরুতে ‘অ’-এর পরে যদি ই-কার বা উ-কার থাকে, তবে ‘অ’-এর উচ্চারণ ও-কারের মতো হয়। যেমন- অরুণ (ওরুন), অতি (ওতি), অদ্য (ওদ্ দো) ইত্যাদি।
৩. শব্দের শুরুতে ‘অ’-এর পর ক্ষ বা জ্ঞ থাকলে ‘অ-এর উচ্চারণ ও-এর মতো হয়। যেমন- দক্ষ (দোক্ খো), যজ্ঞ (যোগ্ গো), লক্ষ (লোক্ খো) লক্ষণ (লোক্ খোন) ইত্যাদি।
৪. বাংলা ভাষায় বেশ কিছু বিশেষণে অথবা বিশেষণরূপে ব্যবহৃত পদের অন্ত্য অ লুপ্ত না হয়ে ও-কারান্ত উচ্চারণ হয়ে থাকে। যেমন –শত (শতো), বড় (বড়ো), কত (কতো) ইত্যাদি।
৫. শব্দ মধ্যস্থিত ‘অ’ আদ্য ‘এ’-এর মতোই ই ,ি ঈ ী, উ ,ু , ঊ, ূ ,ঋ, ৃ কার এবং ক্ষ, জ্ঞ, ্য (য-ফলা) র আগে থাকলে অ-এর উচ্চারণ ও-কারের মতো হয়। যেমন- বিরতি (বিরোতি), সরণী (শরোনি), শতমূল (শতোমূল), অসভ্য (অশোবভো) ইত্যাদি।

৪। ব-ফলা উচ্চারণের পাঁচটি নিয়ম উদাহরণসহ লেখ।

উত্তরঃ উদাহরণসহ ‘ব’ ফলা উচ্চারণের ৫টি নিয়ম:

১. ‘ব’ অথবা ‘ম’-এর সাথে ব-ফলা যুক্ত হলে ‘ব’-এর উচ্চারণ অবিকৃত থাকে। যেমন- লম্ব (লম্‌বো), বিম্ব (বিম্‌বো) প্রভৃতি ।
২. প্রথম ব্যঞ্জনবর্ণে ব-ফলা সংযুক্ত হলে সে ব-ফলার কোনো উচ্চারণ হয় না। যেমন- স্বনাম (শনাম্‌), ধ্বনি (ধোনি), স্বাধিকার (শাধিকার্), স্বদেশ (শদেশ), স্বাগত (শাগতো) প্রভৃতি।
৩. শব্দের মধ্যে কিংবা শেষে ব-ফলা থাকলে সংযুক্ত বর্ণের উচ্চারণ-দ্বিত্ব ঘটে থাকে। যেমন- বিশ্ব (বিশশো), বিদ্বান (বিদ্‌দান) প্রভৃতি।
৪. উৎ (উদ্) উপসর্গযোগে গঠিত শব্দের ‘ৎ’ (দ্)-এর সাথে ব-ফলার ‘ব’ বাংলা উচ্চারণে লুপ্ত হয় না। যেমন- উদ্বেগ (উদ্‌বেগ), উদ্বোধন (উদ্‌বোধোন্) প্রভৃতি ।
৫. বাংলা শব্দে ‘ক’ থেকে সন্ধির সূত্রে আগত ‘গ’-এর সাথে ব-ফলা যুক্ত হলে ‘ব’-এর উচ্চারণ অপরিবর্তিত থাকবে। যেমন- দিগ্বিদিক (দিগ্‌বিদিক্), দিগ্বলয় (দিগ্‌বলয়), দিগ্বিজয় (দিগ্‌বিজয়) প্রভৃতি।


আরো পড়ুন:


৫। উচ্চারণ রীতি কাকে বলে? উদাহরণসহ বাংলা উচ্চারণের চারটি নিয়ম লেখো।

উত্তরঃ উচ্চারণ একটি বাচনিক প্রক্রিয়া। অঞ্চল, সময়, ব্যক্তি, ভৌগোলিক সীমার ভিন্নতার কারণে উচ্চারণের ভিন্নতা হতে পারে। দময়ের বিবর্তনে বাংলা উচ্চারণে বেশ কিছু পরিবর্তন ঘটেছে এবং বভিন্ন কারণে উচ্চারণের বৈচিত্র্য সৃষ্টি হয়েছে। চলিত বাংলার কথ্য বাচনভঙ্গির বৈচিত্র্যের একটি সমন্বিত উচ্চারণমানকে প্রমিত বাংলা উচ্চারণ বলে ধরা হয়।

উচ্চারণের নিয়ম: বাংলা উচ্চারণের পাঁচটি নিয়ম উদাহরণসহ নিচে উল্লেখ করা হলো:

ক. শব্দের শুরুতে যদি অ থাকে এবং তারপর যদি ই, ঈ, উ, উ, ক্ষ, জ্ঞ, য-ফলা বা ঋ-কার যুক্ত ব্যঞ্জনবর্ণ থাকে তাহলে অ-এর উচ্চারণ ও- কারের মতো হয়। যেমন: অতি, (ওতি), নদী (নোদি), তরু (তোরু), ময়ূর (মোয়ুর), পক্ষ (পোক্কো), যজ্ঞ (জোগগোঁ), বন্য (বোনো), মসৃণ (মোসৃন্)।

খ. শব্দের আদ্য ব্যঞ্জনবর্ণে ব-ফলা সংযুক্ত হলে সে ব-এর কোনো উচ্চারণ হয় না। যেমন: স্বাধিকার, (শাধিকার), ত্বক (তক্), ধ্বনি (ধোনি), স্বাগত (শাগতো) ইত্যাদি।

গ. শব্দের মধ্যে কিংবা শেষে ব-ফলা থাকলে সংযুক্ত বর্ণের উচ্চারণদ্বিত্ব ঘটে থাকে। যেমন: বিশ্ব (বিশো), বিদ্বান (বিদ্‌দান), পক্ক (পক্কো) ইত্যাদি।

ঘ. শব্দের আদ্য ব্যঞ্জনবর্ণে ম-ফলা যুক্ত হলে সাধারণত তার কোনো উচ্চারণ হয় না। তবে ম-ফলা আশ্রয়ী ব্যঞ্জনের স্বরধ্বনিকে সানুনাসিক করে। যেমন: স্মরণ, (শরোন), শ্মশান, (শশান), স্মারক (শাঁরোক্) ইত্যাদি।

ঙ. শব্দের মধ্যে বা শেষে ম-ফলা যুক্ত হলে বর্ণের দ্বিত্ব উচ্চারণ হয়ে থাকে এবং ম-ফলা আশ্রয়ী ব্যঞ্জনের স্বরধ্বনিকে সানুনাসিক করে। যেমন: ছদ্ম (ছদ্‌দোঁ), পদ্ম (পদোঁ), রশ্মি (রোশি) ইত্যাদি।

৬। প্রমিত বাংলা বানানের যেকোনো পাঁচটি নিয়ম উদাহরণসহ লেখ।

উত্তর: বাংলা একাডেমি প্রণীত বাংলা বানানের পাঁচটি নিয়ম নিম্নরূপ :

ক) যেসব শব্দে ই, ঈ বা উ, ঊ উভয় শুদ্ধ কেবল সেসব শব্দে ই বা উ এবং কার চিহ্ন িবা ু হবে। যেমন—পল্লী, ধরণি, শ্রেণি, সূচিপত্র, রচনাবলি ইত্যাদি।
খ) রেফের পর ব্যঞ্জনবর্ণের দ্বিত্ব হবে না। যেমন—অর্জন, কর্ম, কার্য, সূর্য ইত্যাদি।
গ) সন্ধির ক্ষেত্রে ক খ গ ঘ পরে থাকলে পূর্ব পদের অন্তস্থিত ম স্থানে ং হবে। যেমন—অহম্ + কার = অহংকার, সম্ + গীত = সংগীত ইত্যাদি।
ঘ) শব্দের শেষে বিগর্স (ঃ) থাকবে না। যেমন—কার্যত, প্রথমত, প্রধানত, প্রায়শ, মূলত ইত্যাদি।
ঙ) সব অতৎসম অর্থাৎ তদ্ভব, দেশি, বিদেশি, মিশ্র শব্দে কেবল ই, ঊ এবং এদের কারচিহ্ন ি বা ু ব্যবহার হবে। যেমন—আরবি, আসামি, ইংরেজি, বাঙালি, সরকারি, চুন ইত্যাদি।

৭। ‘য’ ফলা উচ্চারণের পাঁচটি নিয়ম উদাহরণসহ লেখ।

উত্তরঃ য-ফলার বাংলা উচ্চারণের নিয়ম:

১. য-ফলার পর ব্যঞ্জনধ্বনি বা অ, আ, ও ধ্বনি থাকলে য-ফলা ‘অ্যা’ উচ্চারিত হয়। যেমন— ব্যবহার (ব্যাবোহার্‌), ব্যস্ত (ব্যাস্‌তো) ইত্যাদি।
২. য-ফলার পরে ‘ই’ ধ্বনি থাকলে য-ফলা ‘এ’ উচ্চারিত হয়। যেমন— ব্যক্তি (বেক্‌তি), ব্যতীত (বেতিতো) ইত্যাদি।
৩. য-ফলা শব্দের মাঝে বা শেষে থাকলে ‘দ্বিত্ব’ উচ্চারিত হয়। যেমন— বিদ্যুৎ (বিদ্‌দুত্‌), বিদ্যা (বিদ্‌দা) ইত্যাদি।
৪. শব্দের প্রথমে য-ফলার সাথে উ-কার, ঊ-কার, ও-কার থাকলে য-ফলার উচ্চারণ হয় না। যেমন— দ্যুতি (দুতি), জ্যোতি (জোতি) ইত্যাদি।
৫. ‘হ’-এর পর য-ফলা থাকলে য-ফলা ‘জ্‌ঝ’ উচ্চারিত হয়। যেমন— সহ্য (শোজ্‌ঝো), গ্রাহ্য (গ্রাজ্‌ঝো) ইত্যাদি।


এইচএসসি বাংলা ২য় পত্রের বাংলা উচ্চারণের নিয়ম নোট ২০২৫ | বাংলা উচ্চারণের নিয়ম নোট ২০২৫ pdf download

Facebook
X
LinkedIn
Telegram
Print

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Stay Connected

Subscribe our Newsletter

Scroll to Top