এইচএসসি বাংলা ১ম পত্র অপরিচিতা গল্পের অনুধাবন প্রশ্ন ও উত্তর । এখান থেকে প্রতিবছরই প্রশ্ন এসে থাকে তাই তোমাদের জন্য আজকে নিয়ে আসলাম ১০০% কমন উপযোগী অপরিচিতা গল্পের অনুধাবন প্রশ্ন ও উত্তর । এগুলো অনলাইনে পড়ার পাশাপাশি তুমি পিডিএফ ডাউনলোড করে অফলাইনে পড়তে পারবে । তাহলে চলো, শুরু করি অপরিচিতা গল্পের অনুধাবন প্রশ্ন ও উত্তর ।।
অপরিচিতা গল্পের অনুধাবন প্রশ্ন ও উত্তর PDF
০১। “সেজন্য কিছু ভাবিবেন না—এখন উঠুন।” —উক্তিটিতে বক্তার মনোভাব ব্যাখ্যা কর।
উত্তর: “সেজন্য কিছু ভাবিবেন না- এখন উঠুন”- উক্তিটিতে বক্তার দৃঢ় মনোভাব প্রকাশ পেয়েছে।
আলোচ্য উক্তিটি শম্ভুনাথবাবু বরযাত্রীকে উদ্দেশ্য করে বলেছিলেন। পাত্রের মামা যখন গয়না পরখের কাজটি করছিলেন তখনি শম্ভুনাথবাবু অপমানিত হন এবং মানসিকভাবে সিদ্ধান্ত নেন কল্যাণীকে তিনি এ পরিবারে বিয়ে দিবেন না। তাই গয়না পরখের পরেই তিনি বরযাত্রী কে আহার করিয়ে বিদায় দিতে চেয়েছেন এবং তার অবস্থানের দৃঢ়তা আলোচ্য উক্তিটির মাধ্যমেই প্রকাশ পেয়েছে।
০২। “ছোটোদের সঙ্গে সে অনায়াসে এবং আনন্দে ছোটো হইয়া গিয়াছিল।” —উক্তিটির তাৎপর্য বর্ণনা কর।
উত্তর: “ছোটোদের সঙ্গে সে অনায়াসে এবং আনন্দে ছোটো হইয়া গিয়াছিল।”
আলোচ্য উক্তিটি কল্যাণী সম্পর্কে করা হয়েছে। কল্যাণী পুরাদস্তুর সাধারণ জীবনযাপন করত। সে সকলের সাথেই জলদি মিশে যেতে পারত। এমনকি ছোটো ছেলেমেয়েদের সাথে সে এমনভাবে মিশে গিয়েছিল যেন তাদের মাঝে বয়সের কোনো তফাত নেই। সেও তাদের মতো ছোটো হয়ে গিয়েছিল। সে ছিল সঞ্জীবনী প্রাণের উৎস।
০৩। ‘একে তো বরের হাট মহার্ঘ, তাহার পরে ধনুক-ভাঙা পণ’ – ব্যাখ্যা কর।
উত্তর: উক্তিটিতে সমকালীন যৌতুক প্রথার স্বরূপ ফুটে উঠেছে।কল্যাণীর সাথে অনুপমের যখন বিয়ের কথা চলছিল তখন জানা যায়, কল্যাণীর বয়স পনেরো। মেয়ের বয়স বেশি হবার কারণ ব্যাখ্যা করতে গিয়ে হরিশ জানায়, একে ভালো ছেলে খুঁজে পাওয়া মুশকিল তার ওপর পাওয়া গেলেও তাদের যৌতুকের চাহিদা মেটানো কল্যাণীর বাবার পক্ষে সম্ভব হয়নি। ফলে মেয়ের বয়স একটু বেশি। এখানে মূলত সে সময় সমাজে প্রচলিত যৌতুক প্রথার কুফল দেখানো হয়েছে।
০৪। “এইটে একবার পরখ করিয়া দেখো।”—ব্যাখ্যা কর।
উত্তর: শম্ভুনাথবাবু বর পক্ষের দেওয়া একজোড়া এয়ারিং সেকরার হাতে দিয়ে পরখ করে দেখতে বলেছিলেন। ‘অপরিচিতা’ গল্পের অনুপমের পরিবার বিয়ের আগে কন্যার বাড়ি থেকে দেয়া সমস্ত গয়না যাচাই করে দেখতে চায়। এতে কন্যার পিতা শম্ভুনাথবাবু অপমানিত বোধ করেন। সকল গয়না যাচাই শেষে তিনি বরপক্ষ থেকে দেয়া একজোড়া এয়ারিংও যাচাই করার জন্য সেকরার হাতে দিয়ে পরখ করবার জন্যে এই কথাটি বলেছিলেন।
০৫। ‘মামা বিবাহ-বাড়িতে ঢুকিয়া খুশি হইলেন না। -কেন? অপরিচিতা গল্পের অনুধাবন প্রশ্ন
উত্তর: মামা বিবাহ-বাড়িতে ঢুকিয়া খুশি হইলেন না—কারণ কনে পক্ষের আয়োজন খুব একটা ভালো ছিল না। অনুপমের মামা বিয়ে বাড়িতে ঢুকে দেখলেন উঠানটিতে বরযাত্রীদের জায়গা সংকুলান হওয়া কঠিন, তার উপর সমস্ত আয়োজন নিতান্ত মধ্যম প্রকৃতির। শম্ভুনাথবাবুর ব্যবহারও ছিল ঠান্ডা এবং বিনয় অজস্র ছিল না। তাই বিয়ে বাড়িতে ঢুকে মামা খুশি হতে পারেননি।
০৬। “ঠাট্টা তো আপনিই করিয়া সারিয়াছেন” – উক্তিটি ব্যাখ্যা কর ।
উত্তর: অনুপমের মামা সেকরা দিয়ে কল্যাণীর গহনা পরীক্ষা করায় ক্ষুব্ধ শম্ভুনাথ সেন প্রশ্নোক্ত উক্তিটি করেন। অনুপমের মামা বিয়ের জন্য নির্ধারিত গয়না ঠিকঠাক আছে কি-না তা পরীক্ষা করে দেখার জন্য বিয়ের আসরে সাথে করে সেকরা নিয়ে যান এবং কল্যাণীর শরীর থেকে সমস্ত গহনা খুলে এনে পরীক্ষা করেন। তাঁর এ কাজে শম্ভুনাথ সেন চরম অপমানিত বোধ করেন এবং এমন পরিবারে নিজের মেয়েকে বিয়ে না দেবার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেন। তাই গহনা পরীক্ষা শেষে তিনি বরযাত্রীদের খাইয়ে দাইয়ে গাড়ি ডেকে দিতে বলেন। তাঁর এ কাজে অনুপমের মামা অবাক হয়ে তিনি ঠাট্টা করছেন কি না জিজ্ঞেস করায় শম্ভুনাথ বাবু উক্তিটি করেন।
০৭। “মেয়ের চেয়ে মেয়ের বাপের খবরটাই তাঁহার কাছে গুরুতর।” —ব্যাখ্যা কর।
উত্তর: অনুপমের মামার লোভী মানসিকতার পরিচয় দিতে উক্তিটি করা হয়েছে।
অনুপমের জন্য নানা জায়গা থেকে বিয়ের সম্বন্ধ আসলেও তার মামা চান এমন ঘরে ভাগ্নের বিয়ে দিতে যাদের সম্পদ খুব বেশি না থাকলেও যেটুকু আছে সেটুকু মেয়ের জন্য উজাড় করে দিতে দ্বিধা করবে না। আবার, মর্যাদায় একটু নিচু হওয়াতে তারা মাথা উঁচু করে কথাও বলতে পারবেনা। তাই, মেয়ের থেকে মেয়ের বাপের খবরই অনুপমের মামার কাছে বেশি গুরুত্বপূর্ণ।
আরো পড়ুন :
০৮। “এটা আপনাদের জিনিস, আপনাদের কাছেই থাক।”— এরূপ মন্তব্যের কারণ কী?
উত্তর: “এটা আপনাদের জিনিস আপনাদের কাছেই থাক” –মন্তব্যটি শম্ভুনাথবাবুর।
অনুপম–কল্যাণীর বিয়ের দিন অনুপমের পরিবার কন্যাপক্ষ থেকে দেয়া গয়না পরখ করে দেখতে সেকরা নিয়ে আসে। এতে শম্ভুনাথবাবু অপমানিত বোধ করেন। এই গয়নাগুলোর মধ্যে একজোড়া এয়ারিং ছিল যা পাত্রপক্ষের দেয়া। সে এয়ারিংয়েই কেবল ভেজাল পাওয়া যায়। তখন শম্ভুনাথ বাবু পরিহাস করে এ মন্তব্যটি করেন।
০৯। “ফল্গুর বালির মতো তিনি আমাদের সমস্ত সংসারটা নিজের অন্তরের মধ্যে শুষিয়া লইয়াছেন।”—উক্তিটি ব্যাখ্যা কর।
উত্তর: অনুপমের মামার চারিত্রিক বৈশিষ্ট্য সম্পর্কে উক্তিটি করা হয়েছে।
অনুপমের মামা তার থেকে মাত্র বছর ছয়েকের বড় হলেও সংসার সামলানোর সমস্ত কাজ তিনিই করতেন এবং অত্যন্ত দক্ষতার সাথেই করতেন। ফল্গু নদীর বালি যেমন এর সমস্ত জল নিজের মধ্যে শুষে নেয়, অনুপমের মামাও তেমনি তাদের সংসারকে নিজের মধ্যে মিশিয়ে নিয়েছিলেন। সংসারের সমস্ত দায়-দায়িত্ব পালনে তাঁর এ ভূমিকার বিষয়টিই উক্তিটি দ্বারা বোঝানো হয়েছে।
১০। ‘বাহিরে তো সে ধরা দিলই না, তাহাকে মনেও আনিতে পারিলাম না।’ —ব্যাখ্যা কর।
উত্তর: ‘বাহিরে তো সে ধরা দিলই না, তাহাকে মনেও আনিতে পারিলাম না’—উক্তিটি অনুপমের
অনুপমের সাথে কল্যাণীর বিয়ে ঠিক হওয়া সত্ত্বেও কল্যাণীকে সে বাস্তবে বা ছবিতে কোনোভাবেই দেখেনি। এরপর যখন বিয়ে ভেঙে যায় তখন অনুপমের মনে অস্থিরতা জেগে ওঠে শুধু কল্যাণীকে একপলক দেখার জন্য। কল্যাণী বাস্তবেও তার জীবনে আসেনি এবং কল্যাণীকে সে মনের চোখেও দেখতে পায়নি। তাই আক্ষেপ করে অনুপম এ কথাটি বলেছিল।
১১। “এই তো আমি জায়গা পাইয়াছি।”-ব্যাখ্যা কর। অপরিচিতা গল্পের অনুধাবন প্রশ্ন
উত্তর: উক্তিটি দ্বারা কল্যাণীর কাছাকাছি থাকতে পারার সুযোগ লাভের সার্থকতাকে বোঝানো হয়েছে।
অনুপমের সাথে কল্যাণীর বিয়ে ভেঙে গেলে সে নারী শিক্ষার ব্রত গ্রহণ করে এবং আর বিয়ে করবে না বলে পণ করে। তাই রেলে কল্যাণীর পরিচয় লাভের পর যখন অনুপম কানপুরে তার কাছে আসে, তখন কল্যাণী তাকে বিয়ে করবে না জেনেও অনুপম তার সাথে সাথে থাকে, তাকে ছোটো-খাটো কাজে সাহায্য করে। যদিও কল্যাণীকে সে আপন করে আজও পায়নি। তারপরও, এই সামান্য জায়গা পাওয়াকেই অনুপম তার জীবনের চরম সার্থকতা বলে মনে করে।
১২। “তারপর বুঝিলাম, মাতৃভূমি আছে।’-বুঝিয়ে লেখ ।
উত্তর: কল্যাণীর চরিত্রে দেশপ্রেমের বিষয়টিকে ইঙ্গিত করে অনুপম উক্তিটি করেছে।
অনুপমের সাথে কল্যাণীর বিয়ে ভেঙে গেলে সে আর বিয়ে করবে না বলে পণ করে এবং নারী শিক্ষার ব্রত গ্রহণ করে। নারীদের শিক্ষিত করে তোলার মাধ্যমে কল্যাণী দেশের সামাজিক পরিবর্তনের স্বপ্ন দেখে এবং তার এ লক্ষ্যে সে থাকে অনড়। তার দেশপ্রেমের এমন পরিচয় উপলব্ধি করে অনুপম উক্তিটি করে।
১৩। বলিলেন, “সে কী কথা। লগ্ন-”–কে কেন বলেছিল? প্রসঙ্গ উল্লেখ করে বুঝিয়ে দাও ।
উত্তর: বিয়ের আনুষ্ঠানিকতা শুরু না করে শম্ভুনাথ বাবু বরযাত্রীদের খাইয়ে দিতে চাইলে অনুপমের মামা অবাক হয়ে উক্তিটি করেন। কল্যাণীর বাবা তার কথামতো সব গয়না ঠিকঠাক দিয়েছে কি-না তা পরীক্ষা করতে অনুপমের মামা বিয়ের আসরে সেকরা নিয়ে যায় এবং কল্যাণীর গা থেকে গয়না খুলে এনে পরীক্ষা করে। এত শম্ভুনাথ বাবু তাদের নিচু মানসিকতার পরিচয় পান এবং এমন ঘরে নিজের মেয়ের বিয়ে না দেবার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেন। তাই গয়না পরীক্ষা শেষ হলে তিনি লগ্নের তোয়াক্কা না করে বরযাত্রীদের খাবার খেয়ে নিতে বলেন। এতে অবাক হয়ে অনুপমের মামা উক্তিটি করেন।
১৪। ‘অন্নপূর্ণার কোলে গজাননের ছোট ভাইটি’- উক্তিটি ব্যাখ্যা করো।
উত্তর: নিজে চেষ্টা করো।
এইচএসসি বাংলা ১ম পত্র অপরিচিতা গল্পের অনুধাবন প্রশ্ন ও উত্তর PDF Download